টাঙ্গাইলের চারাবাড়ি সেতুতে অ্যাপ্রোচ ধ্বসে যানচলাচল বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:২৩ এএম, সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০ | ৩০৩

টাঙ্গাইল-তোরাপগঞ্জ সড়কে ধলেশ্বরী নদীর উপর চারাবাড়ি ঘাট সেতুর বাম তীরের অ্যাপ্রোচ ধ্বসে পশ্চিমাঞ্চলের সাথে যানচলাচল বন্ধ । শনিবার সকাল থেকে এ সেতুতে যান চলাচল বন্ধ করেছেন স্থানীয়রা। এর ফলে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন চরাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ। এছাড়াও ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে সেতুটি।

জানা যায় প্রতিদিন টাঙ্গাইলের চরাঞ্চলের কাতুলী, হুগড়া, কাকুয়া, মাহমুদনগর ও নাগরপুরের ভাড়রা ইউনিয়নে লক্ষাধিক মানুষ এ সেতু দিয়ে চলাচল করে। সাম্প্রতিক নদীর প্রবল ¯্রােত ও গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে ব্রীজের অ্যাপ্রোচে ধ্বস দেখা দেখা দেয়। ফলে দুই একদিন ঝুঁকি নিয়ে ওই সেতু দিয়ে চলাচল করলেও এখন তা স্থানীয়রা যানচলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। কয়েকদিন হয়ে গেলেও ব্রীজের অ্যাপ্রোচে ধ্বস রোধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়াতে স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে ক্ষোপ।

নাম প্রকাশে অনুইচ্ছক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন প্রতি বছরই বর্ষা এলে এই ব্রীজের পাশসহ আশেপাশে ভাঙ্গান দেখা দেয়,কারণ এ ব্রীজের পাশে থেকে প্রচুর পরিমাণ বালু উওোলন করা হয়। ফলে এর প্রভাব ব্রীজসহ আশেপাশের এলাকায় ভাঙ্গান দেখা দেয়। কিন্তু কেউ কোন প্রদক্ষেপ নেয় না মাঝে মধ্যে প্রশাসন ধাওয়া দিলে বালু উওোলন কয়েদিন বন্ধ থাকলে আবার তা পুনরায় চালু হয় সারা বছরই চালু উওোলন করা হয়। ভোগান্তি তো আমাদের সহ্য করতে হয়। সবার আগে বালু উওোলন বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হবে। তা না হলে কোন লাভ হবে না।

সিএনজি চালক শাহিন বলেন দুই একদিন ঝুঁকি নিয়ে ব্রীজের ওপার যাত্রী নিয়ে গেলেও এখন তা আর সম্ভব হচ্ছে না কারণ ব্রীজের নীচের অবস্থা ভয়াবহ খারাপ যে কোন সময় ব্রীজটি ভেঙ্গে যেতে পারে । এখন ব্রীজটি দ্রুত সংস্কার করা দরকার তা না হলে আমরা না খেয়ে মারা যাব। এমনিতেই করোনায় তেমন কোন যাত্রী নাই তারপর আবার বন্যা, খুব কষ্ট পরিবার নিয়ে জীবন যাপন করছি।

অপরদিকে ব্রীজের ওপারেই ঘোষপাড়া দেখো দিয়েছে নদীর তীব্র ভাঙ্গান। ইতি মধ্যেই এক হাজার জিও ব্যাগ দিয়ে নদীর ভাঙ্গান রোধে প্রদক্ষেপ নেওয়া হলেও তাতেও রোধ না হওয়া আরও দুই হাজার জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ চলছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে মাটি দিয়ে জিও ব্যাগ ৩০-৪০জন শ্রমিক জিও ব্যাগ ফেলার জন্য কাজ করছে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মো.ছানোয়ার হোসেন বলেন ব্রীজের অ্যাপ্রোচে ধ্বস ও ঘোষ পাড়ার নদীর ভাঙ্গান এলাকা আমি পরিদর্শন করেছি এবং এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা হয়েছে দ্রুত প্রদক্ষেপ গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছি। ইতিমধ্যে ঘোষ পাড়ার নদীর ভাঙ্গান রোধে তিন হাজার জিও ব্যাগ ফালানোর কাজ চলছে। আর ব্রীজের ইসটিমেট হচ্ছে খুব দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।

টাঙ্গাইল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম আজম বলেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে সেতুর অ্যাপ্রোচে দেখা দেয়া ধসের এখন স্থায়ী সংস্কার সম্ভব নয়। তবে সেতুতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে অস্থায়ী ভিত্তিতে মেরামতের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আনছারী জানান,অ্যাপ্রোচে ধ্বস শুরু হওয়ার সাথে সাথে তিনি ছানোয়ার হোসেন এমপি ও এলজিইডিকে বিষয়টি জানান। এমপি মহাদয় ব্রীজের অ্যাপ্রোচে ধ্বস রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন। এলজিইডি দ্রুত কাজ বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

কাতুলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নায়েব আলী সরকার বলেন ভাঙ্গন শুরু হওয়ার সাথে সাথে আমাদের সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন এমপি নদী ভাঙ্গান পরিদর্শন করে ভাঙ্গান রোধের ব্যবস্থা নিয়েছেন এ লক্ষেই কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। ব্রীজের অ্যাপ্রোচে ধ্বস প্রসঙ্গে বলেন অ্যাপ্রোচে ধ্বস শুরু হওয়ার সাথে সাথে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে অবহিত করেছি আশা করি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।