নওয়াজের ভাতিজা পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী!

অালোকিত ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৩৫ পিএম, রোববার, ৩০ জুলাই ২০১৭ | ২৩৭

হামজা শরিফ। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়াপাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দেশটির প্রধানমন্ত্রী হলে তাঁর জায়গায় কে আসছেন, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আলোচনায় নাম আসছে তাঁর ছেলে হামজা শরিফ ও তিনজন প্রাদেশিক মন্ত্রীর। শাহবাজ নিজে চাইছেন তাঁর ছেলে হামজা শরিফকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী করতে। তবে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতারা বলছেন, শেষ পর্যন্ত কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী, তা নওয়াজ শরিফই ঠিক করবেন। আদালত প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করার পর গত শুক্রবার নওয়াজ শরিফ পদত্যাগ করেন। দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন নওয়াজের ভাই মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ। তাঁর আগে অবশ্য ৪৫ দিনের জন্য অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন নওয়াজের দল পিএমএল-এনেরই নেতা শহিদ খাকান আব্বাসি। পাকিস্তানের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন আগামী বছর অনুষ্ঠিত হবে। ওই নির্বাচনের আগে পাঞ্জাবের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কবজায় রাখতে চাইবেন নওয়াজ। এ কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মনোনয়নের সিদ্ধান্ত তাঁর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পাঞ্জাবের একজন জ্যেষ্ঠ আইনপ্রণেতা (পিএমএল-এন) ডন নিউজকে বলেন, ‘শাহবাজ শরিফ চান তাঁর ছেলে হামজা শরিফই হোন পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী। তিনি (হামজা) ইতিমধ্যেই উপমুখ্যমন্ত্রীর মতো ভূমিকা পালন করছেন। শাহবাজের চাওয়া হলো, অন্তর্বর্তী সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে ছেলে শীর্ষ পর্যায়ে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো অভিজ্ঞতা অর্জন করুক।’ তবে দলটির অন্য কয়েকজন নেতা বলেন, হামজাকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া নওয়াজের জন্য খুব একটা সহজ হবে না। কারণ, নওয়াজ একই সঙ্গে তাঁর ভাইকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ও ভাতিজাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে হয়তো দেখতে চাইবেন না। নওয়াজের পরিবার ও সন্তানদের সঙ্গে হামজার কলহের গুজব রাজনৈতিক অঙ্গনে আছে। পানামা পেপারস কেলেঙ্কারি মামলায় চাচা নওয়াজের পক্ষে জোরালো কণ্ঠে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি হামজাকে। এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করা থেকেও তিনি বিরত ছিলেন। হামজা লাহোর থেকে জাতীয় পরিষদের নির্বাচিত সদস্য। যদি মুখ্যমন্ত্রী হতে হয়, তাঁকে প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচন করে জয়ী হতে হবে। এ জন্য বাবার ছেড়ে দেওয়া প্রাদেশিক পরিষদে আসনে হামজা উপনির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। পাঞ্জাবের প্রাদেশিক প্রদেশের একজন মন্ত্রী বলেন, হামজা ছাড়াও প্রাদেশিক আইনমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ, তথ্যমন্ত্রী মুজতবা সুজাউর রেহমান ও খাদ্যমন্ত্রী বিলাল ইয়াসিন মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য বিবেচনায় আছেন। তিনি বলেন, চূড়ান্তভাবে হামজা মনোনীত হলে এই তিনজনের মধ্য যেকোনো একজন ৪৫ দিনের জন্য অন্তর্বর্তী মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন। যদি কোনো কারণে হামজা শরিফ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের আশীর্বাদপুষ্ট না হন, সে ক্ষেত্রে এই তিনজনের যেকোনো একজনে ভাগ্য খুলে যেতে পারে। এই মন্ত্রী আরও বলেন, আইনমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহকে মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বিশ্বস্ত সহযোগী বলে ধরা হয়। কিন্তু এরপরও তিনি বিবেচনায় না-ও থাকতে পারেন। কারণ, শরিফের প্রয়োজন ‘আরও দৃঢ়’ কাউকে। মুজতবা সুজাউর রেহমান লাহোরের প্রভাবশালী আরিয়ান পরিবার থেকে আসা পাকিস্তান মুসলিম লিগের (এন) একজন শক্তিশালী নেতা। তাঁর বাবা মিয়া সুজাউর রেহমান ছিলেন লাহোর মেট্রোপলিটন করপোরেশনের মেয়র। শরিফ পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও আছে মুজতবা সুজাউরের। বিলাল ইয়াসিন নওয়াজ শরিফের স্ত্রী কুলসুম নওয়াজের আত্মীয়। তাঁর এ অবস্থান পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে তাঁকে এগিয়ে রাখবে।