ইসরায়েলি হামলায় নিহত ইরানের তিন শীর্ষ নেতা ও দুই বিজ্ঞানী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৫৩ পিএম, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫ | ২১৩

ইরানের ছয়টি শহরে এক সঙ্গে পরিকল্পিত বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। লক্ষ্যবস্তু ছিল দেশটির প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সামরিক ঘাঁটি ও গোপন পারমাণবিক স্থাপনা। এ হামলার নিহত হয়েছেন ইরানের তিন শীর্ষ নিরাপত্তা নেতৃত্ব ও দুই বিজ্ঞানী।

শুক্রবার (১৩ জুন) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, ইসরায়েলের এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামি ও ইরানের শীর্ষ নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ঘনিষ্ঠ সহযোগী আলি শামখানি। নিহতের এ তালিকায় আরো আছেন দেশটির দুই পরমাণু বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ মাহদি তেহরাঞ্চি ও ড. ফারিদুন আব্বাসি।

ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি এক দশকের বেশি সময় ধরে ইরানি সেনাবাহিনীর কৌশলগত রূপকার ছিলেন। জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় তার অবদান ছিল অপরিসীম। রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন আঞ্চলিক কৌশল ও বৈদেশিক প্রতিরোধ আন্দোলনকে।

দেশটির শীর্ষ নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ঘনিষ্ঠ সহযোগী আলি শামখানিও দীর্ঘ এক দশক জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি ইরান-সৌদি সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার আলোচনায় তেহরানের প্রতিনিধি ছিলেন তিনি। শামখানি আগে রেভল্যুশনারি গার্ড ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদেও ছিলেন। ২০২৩ সালে তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হলেও তিনি খামেনির ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত থাকেন এবং পারমাণবিক আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

এছাড়া হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সামরিক প্রকৌশলী। তাদের মধ্যে নিহত দুই জন পরমাণু বিজ্ঞানীর নাম প্রকাশ করেছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। তারা হলেন, ড. মোহাম্মদ মাহদি তেহরাঞ্চি ও ড. ফারিদুন আব্বাসি।

ড. ফারিদুন আব্বাসি ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার (এইওআই) সাবেক প্রধান। ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোর দেখভাল করে থাকে সংস্থাটি। ২০১০ সালে তেহরানের একটি সড়কে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। সে সময় প্রাণে বেঁচে যান তিনি। আরেক বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ মাহদি তেহরাঞ্চি তেহরানের ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

এদিকে রাতভর হামলার জবাবে এরই মধ্যে শতাধিক ড্রোন নিক্ষেপ করে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা শুরু করেছে ইরান। ইরানের পক্ষ থেকে ১০০টিরও বেশি ড্রোন ইসরায়েলের দিকে নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে। ইরান পাল্টা আক্রমণ করার আগেই নিজ দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছিল ইসরায়েলি সরকার। এছাড়া দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনায় নিরাপত্তার স্বার্থে নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে জর্ডান।