আমার স্বপ্নের বিদ্যালয়
বিদ্যালয় হচ্ছে এমন একটা শিক্ষাদান কেন্দ্র যেখানে শিক্ষার্থীরা অনেকগুলো শিক্ষকের তত্ত¦বধানে পাঠ্যপুস্তুকের মাধ্যেমে জ্ঞন অর্জন করে। আমার স্বপ্নের বিদ্যালয় এমন না । একটু ভিন্নভাবে পরিচালিত হয় আমার বিদ্যালয়। এখানে শিক্ষকরা যেমন আনন্দ নিয়ে শ্রেণি পাঠ পরিচালনা করেন শ্রেণি শিক্ষার্থীরা ও তাদের পাঠ আনন্দের সাথে সম্পন্ন করে।
আমার চাকুরীর দীর্ঘ ১৫ বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে যা দেখলাম এখন আর আগের মতো লেকচার মেথোড পদ্ধতিতে শ্রেণি পাঠ নেই। সব কিছুই শেয়ারিং এর মাধ্যেমে হচ্ছে। একজন শিক্ষক যদি বন্ধুই না হতে পারে তাহলে শিক্ষার্থীরা শিখবে কি করে ? শেখার জন্য চাই উপযুক্ত পরিবেশ, মায়ের আদর-স্নেহ, শাসন,খেলার মাঠ পরিচ্ছন্ন, পরিপাটি শ্রেণিকক্ষ,পর্যাপ্ত উপকরণ।
বিদ্যালয়টা হবে একটা বিশ্বজগৎ যেখানে হাত বাড়ালেই সব স্পর্শ করা যাবে। বিদ্যালয়ে থাকতে হবে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, একটা লাইব্রেরী, বঙ্গবন্ধু কর্নার, মুক্তিযুদ্ধ কর্নার,একটা কমন রুম।
শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকেরই থাকবে আইডি কার্ডসহ স্কুল ড্রেস কোড। বিদ্যালয়ে থাকতে হবে নিরাপদ পানি ও পরিচ্ছন্ন সেনিটেশন ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে।
আমার স্বপ্নে বিদ্যালয়ের নাম ভাল্লুককান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এতক্ষণ আমি যা যা বললাম সবই আমার স্বপ্ন ছিল। আমার বিদ্যালয়কে ঘিরে। যা এখন বাস্তব। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক,এস এম সি, অভিভাবক মিলে এক হয়ে যদি বিদ্যালয়কে ভালোবাসা যায় তবে এমন স্বপ্ন সত্যই একদিন সত্যি হবে। আমি আমার স্বপ্নের বিদ্যালয়কে নিয়ে গর্বিত।
ঝরে পড়া রোধ কল্পে করনীয় পদক্ষেপ
বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে ঝরে পড়ার প্রবনতা দেখা যাচ্ছে। কোভিড -১৯ কালীন সময় হতে এর প্রভাব ব্যপক বৃদ্ধি পেয়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ধরে রাখতে আমরা শিক্ষকদের সবার চেয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। নিম্ন লিখিত পদক্ষপগুলো যদি গ্রহন করা যায় তবে আমার মতে ঝরে পড়া রোধ করা অনেকটাই সম্ভব।
পদক্ষেপ গুলো হলো-
১। মা সমাবেশ নিয়মিত করা।
২। অভিভাবক সমাবেশ করা।
৩। উঠোন বৈঠক করা।
৪। প্রতি শ্রেণিতে প্রতি সপ্তাহে সেরা সাবলীল পাঠক,সেরা পার্ফরমার, সর্বোচ্চ উপস্থিতি,চারু ও কারু কলায় ও সঙ্গীতে সেরা একজন করে নির্বাচিত করা ও তাদের স্বীকৃতি প্রদান। এভাবে মাস শেষে পুরো বিদ্যালয় থেকে সেরা বের করে আনা ও শিক্ষর্থীকে স্বীকৃতি প্রদান করা।
৫। বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এলাকাকে ব্লক ভিত্তিক ভাগ করে মায়েদেরকে সেখানে সংযুক্ত করা ও তাদের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা।
৬। মোবাইল ভিজিট ও হোম ভিজিট অব্যাহত রাখা।
৭। শিক্ষর্থীদের নিরাপত্তার প্রতি যত্নশীল হওয়া।
৮। বিদ্যালয়ের পরিবেশ আনন্দময় ও পরিচ্ছন্ন রাখা।
৯। সর্বপরি শ্রেণি পাঠদান আনন্দঘন ও শিক্ষর্থী বান্ধব করা যাতে শিক্ষর্থীরা বিদ্যালয়ে আসার জন্য উম্মুখ থাকে।
১০। দুর্বল শিক্ষার্থদের জন্য বিশেষ যত্নের ব্যবস্থা করা।
১১। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষপ গ্রহন করা।
১২। বিদ্যালয়ে কো -কারিকুলাম এ্যাকভিটিজ এর উপড় জোড় দেয়া।
১৩। বিদ্যালয়ের সকল কাজে তাদের অংশীদারিত্ব করা।
আমরা যদি এভাবে বিদ্যালয়কে পরিচালনা করতে পারি তবে আমার মনে হয় ঝরে পড়া রোধ করা সম্ভব।
লেখক
ভাল্লুককান্দি সরকারি প্রাধমিক বিদ্যালয়
প্রধান শিক্ষক