আমরা কি দুর্নীতিকে জাতীয়করণ করছি!

সুমন পারভেছ
প্রকাশিত: ০৬:২৬ পিএম, শুক্রবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ | ৩৮৬

এই যে স্যার, আপনি ঘুষ খাচ্ছেন? আপনি বেআইনি ভাবে প্রশ্ন ফাঁস করছেন? আপনি জাল মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট দাখিল করলেন? আপনি টাকার বিনিময়ে আসামীকে ছেড়ে দিলেন?

“দাড়ান স্যার একটু রেকর্ড করে নেই, একটি ছবি তুলে রাখি” না হলে আপনি অপরাধী কিভাবে জনগণকে দেখাবো?

আমরা কি তাহলে দুর্নীতিকে জাতীয়করণ করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি!

ধারা ৩২, যাতে বলা হয়েছে ‘যদি কোনো ব্যক্তি বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে কোনো সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ কোনো সংস্থার কোনো ধরনের অতিগোপনীয় বা গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওর্য়াক বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক্স মাধ্যমে ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করেন বা করিতে সহায়তা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ র্কায হইবে কম্পিউটার গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ।’

স্পষ্টই’ এই আইন হলে আমলা এবং ক্ষমতাসীন দলের লোকজন ছাড়া অন্য যে কারও পক্ষেই সরকারি বা আধা সরকারি কোনো দপ্তরে ক্যামেরা, মোবাইল ফোন বা পেনড্রাইভের মতো ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার এখন বিপজ্জনক হয়ে পড়বে। এমনকি ওই দপ্তরের ই-মেইল বা কম্পিউটার নেটওর্য়াক ব্যবহার করে কাউকে কোনো তথ্য বা নথির কপি পাঠানোও গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।

আমাদের আইন ব্যবস্থায় এই ধারাটি দেশের জন্য খুবই বিপজ্জনক হয়ে দাড়াবে। প্রতিটি কাজে যদি জবাবদিহীতা না থাকে তাহলে সেই কাজ কখনও ভাল কিছু দিতে পারে না।

আমি মনে করি যদি সাংবাদিকরা তার প্রতিটি কাজে স্বাধীনতা না পায়, সেই দেশে অপরাধের বীজ হাজার গতিতে এগিয়ে যাবে।

আজ প্রায় প্রতিটি সেক্টরে কম বেশী দুর্নীতি ছেয়ে গেছে। সেখানে এই ৩২ ধারাটি অপরাধ সংঘটিত করতে সহায়তা করবে বলে আমি মনে করি। অপরাধীকে দেশ, সরকার, ব্যক্তি যেই সহযোগিতা করুক না কেন, সেই দেশ কখনও সামনে অগ্রসর হতে পারে না।

মুক্তিযোদ্ধারা যেমন দেশের জন্য রক্ত দিয়ে গেছেন তেমনি সাংবাদিকরাও সেই মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ও ভালবাসায় দেশকে রক্ষা ও সহযোগিতা করার জন্য সরকার, প্রশাসন ও আইনি সহায়ক হিসাবে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন।

সর্বোপরি বলতে চাই ৩২ ধারাটি সবকিছু বিবেচনা করে বিলুপ্ত করা হোক।