গর্তের সামনে আসলেই নামতে হচ্ছে যাত্রীদের !

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: ০৫:২৬ পিএম, রোববার, ২৯ মে ২০২২ | ২২১

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী পৌর শহরের চৌরাস্তা-কয়ড়া-কেরামজানি সড়ক দেবে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আটকে যাচ্ছে যানবাহন। গাড়ি গর্তের সামনে আসলেই নেমে যাচ্ছেন যাত্রীরা। গাড়ি পার হয়ে আবারও গাড়িতে উঠছেন তাঁরা। উপজেলার চার ইউনিয়নের লোকজনসহ পৌরবাসীর একমাত্র ভরসা এই সড়ক। চলাচলে দেখা দিয়েছে বিঘ্নতা। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীসহ যাতায়াতকারীরা।

স্থানীয়রা বলেন, উপজেলার মধ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সংস্কারের কিছুদিন পরই আড়াই কিলোমিটার জুড়ে দেখা দেয় বিভিন্ন অংশে ফাঁটল। নিন্মমানের কাজ হওয়ায় এ বেহাল দশা হয়েছে। দ্রুত প্রদক্ষেপ নেয়ার দবি জানিয়েছেন যাতায়াতকারীরা। উপজেলা এলডিইডি প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের সড়কটি ১ম প্যাকেজে ২.৩ কিলোমিটার দুই পাশ বর্ধিত ও সংস্কারে ২ কোটি টাকার উপরে বরাদ্দ ছিল। স্থানীয় এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌর শহরের চৌরাস্তা হয়ে কয়ড়া রোড দিয়ে চলে গেছে সড়কটি উপজেলার শেষ সীমানা বলিভদ্র ইউনিয়নে। পাশেই গোপালপুর উপজেলা। এখানে এশিয়া মহাদেশের সবচয়ে দৃষ্টি নান্দন ২০১ গম্বুজের (ঝাওয়াল) মসজিদ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ছোট-বড় যনবাহনগুলো এ সড়কে চলাচল করে। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে গর্তে পানি জমে তীব্র আকার ধারণ করেছে শফিকুলের ইসলামের রাইস মিল পর্যন্ত। মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে চার থেকে পাঁচ স্থানে। ভ্যান, রিকশা ও অটোরিকশাগুলোও রেহাই পাচ্ছে না। যাত্রী ও পণ্য নামিয়ে পার হচ্ছে তাঁরা। ভারি ও জরুরি সেবার গাড়ি রয়েছে আটকে। দেখা দিচ্ছে যানজট। সময় মত পৌঁছাতে পারছে না উপজেলার সকল শিক্ষার্থী, কর্মজীবি ও শ্রমজীবিসহ নানা পেশার মানুষজন।

ভ্যান চালক শাহিন মিয়া বলেন, দিনে তো যেমন তেমন। রাতে যান চালানো অনেক কষ্ট। গর্তে বৃষ্টির পানি থাকলে বুঝা যায় না। গাড়ি উল্টে যাত্রীরা আহত হয়।

অটো রিকশা চালক সোনা মিয়া বলেন, এভাবে সড়কে গাড়ি চালনো জীবনের ঝুঁকি হয়ে উঠছে। রাস্তা ভাঙার কারণে আগের মত যাত্রী পাওয়া যায় না। আয় রোজগার না হলে তো সংসার চলবে না। দিনে যা উপার্জন হয় তাই দিয়ে সংসার চলে কোন রকম।

স্কুল শিক্ষার্থী মীম আক্তার বলেন, চৌরাস্তা মোড় থেকে শফিকুলের রাইস মিল পর্যন্ত সড়কের বাজে অবস্থা। সময় মতো স্কুলে যাওয়া যাচ্ছে না। গর্তে গাড়ি উল্টে যায়। আমরা ভয়ের মধ্যে থাকি। কর্তৃপক্ষের কাছে জোড় দাবি জানাচ্ছি।

কর্মজীবি অবু রায়হান ও বশির শেখ বলেন, যারা সড়ক সংস্কারের কাজ করছে তারাই ভালো জানে। কয়েক বছরে সড়ক নষ্ট হয়ে যায় এটা ভাবাই যায় না। গাড়ি উল্টে যাওয়ার ভয়ে গর্তের পাশে গাড়ি আসলে যাত্রীরা নেমে পার হয়। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আরও ভোগন্তিতে পড়বে সবাই।

স্থানীয় কাউন্সিলর মিজানুর রহমান বলেন, সড়কটি পুর্নঃসংস্কারের সময় খুবই নিন্মমানের কাজ হয়েছে। সড়কের এখন বেহাল দশা। সড়ক দেবে উঁচুনিচু হয়ে ভাঙন দেখা দিচ্ছে। বিষয়টি মেয়রকে জানিয়েছি।

ধনবাড়ী পৌরসভার মেয়র মুহাম্মদ মনিরুজ্জান বকল জানান, ভোক্তভোগীদের নিকট থেকে বিষয়টি জেনেছি। সড়কটি যেহেতু এলডিইডির মাধ্যমে কাজ হয়েছে। ওই দপ্তরের কর্মকর্তার সাথে কথাও বলেছি। অতি তাড়াতাড়ি পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ধনবাড়ী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী জয়নাল আবেদীন সাগর জানান, মেয়র বিষয়টি জানিয়েছেন। দুর্ভোগ এড়াতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।