দ্রুত গতিতে চলছে সফিপুর ফ্লাইওভারের কাজ
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর বাজার এলাকায় যানজট এক পরিচিত দৃশ্য। বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কের প্রবেশদ্বার হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ এই জায়গায় প্রতিদিনই যানজট হয়। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় যানবাহনের যাত্রী ও চালকসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তবে শিগগিরই এই দৃশ্য বদলে যাবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং এলাকাবাসী । দ্রুত যানজট নিরসনের জন্য এই মহাসড়কের সফিপুর ফ্লাইওভারের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ শেষ হলেই এই এলাকার যানজট থাকবে না ধারণা করছেন এলাকার সাধারণ লোকজন।
জানা যায়, দেশের বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। এটি সারাদেশ হতে উত্তর বঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। এ মহাসড়ক দিয়ে উত্তরাঞ্চলে ১৭ টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। পাশাপাশি গাজীপুরের শিল্প এলাকার শত শত যানবাহন ও হাজার হাজার লোক প্রতিদিন যাতায়াত করেন এ মহাসড়কে। ঢাকার সঙ্গে উত্তর বঙ্গে যাওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক হওয়ায় ঈদের ছুটি সহ বিভিন্ন উৎসবে এ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন উৎসবের সময় এই মহা সড়কে যেন যানজট লেগেই থাকে।
প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপক সাখাওয়াৎ হোসেন জানান, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এডিবির অর্থায়নে সাউথ এশিয়া সাব - রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) সড়ক সংযোগ প্রকল্পের আওতায় জয়দেবপুর, চন্দ্রা ও টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা মহাসড়কের গাজীপুর অংশে চার লেন বিশিষ্ট মহাসড়কটিতে চারটি ফ্লাইওভার, তিনটি ব্রিজ ও কালভার্টসহ ড্রেনেজ সিস্টেম রয়েছে।
ইতোমধ্যে গাজীপুরের চন্দ্রা ও কোনাবাড়ি ফ্লাইওভারসহ ৫ প্রকল্প খুলে দেওয়ায় দীর্ঘ ভোগান্তি মুক্ত যাতায়াতের সু-ব্যবস্থা হয়েছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ অঞ্চলে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে। জয়দেবপুর ভোগড়া বাইপাস মোড় থেকে কালিয়াকৈর বাইপাস মোড় পর্যন্ত প্রায় ১৯ কিলোমিটার মহাসড়ক ফোর লেনে উন্নীতকরণ এবং ফ্লাইওভার ব্রিজ ও ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয় এক হাজার পঁয়ত্রিশ কোটি টাকা। কাজ শেষ করার নির্ধারিত তিন বছর সময় গত ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সফিপুর বাজার ফ্লাইওভারসহ বাকি প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হবে বলে জানা যায়।
সরেজমিনে ঐ এলাকা ঘুরে দেখা ও জানা যায়, শুধুমাত্র সফিপুর ফ্লাইওভারটি ১২০০মিটার দীর্ঘ। সফিপুর বাজারের পশ্চিম ও পূর্ব পাশে এখনো ইতিমধ্যে ফ্লাইওভারের ২২টি গাডারের মধ্যে ১৩ গাডারের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে বাকি ৯ টি গাডারের ও স্লাপের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। উক্ত ফ্লাইওভারের ৭৫% কাজ হয়ে গেছে বাকি ২৫% ফিনিশিং এর কাজ বাকি আছে। ৩ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করছেন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় বাসিন্দা সালাহ উদ্দিন সৈকত জানান , দ্রুতগতিতে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলছে। যার কারণে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন যন্ত্রপাতি রাখা আছে মহাসড়কের আশেপাশে। ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজের জন্য তৈরি হয়েছে ছোট বড় গর্ত ।
স্থানীয় বাসিন্দা নাহিদ আহমেদ বলেন, ফ্লাইওভারের কাজের কারণে কোথাও দেখা গেছে দুই লেনের গাড়ি এক লাইনে চলতে হয় । যার কারণে মাঝে মাঝে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে থাকে। এতে জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়।
এই ব্যাপারে সফিপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান আরো জানান নতুন করে ফ্লাইওভার এর পাশের জমি অধিক গ্রহন হয়নি এখনো। করোণা মহামারীর কারনে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা চিন্তা করে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজে সময় লেগেছে একটু বেশি কিন্তু আমরা আশা করি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন হবে। তখন মহাসড়ক নির্দ্বিধায় যানবাহন চলাচলের উপযোগী হয়ে যাবে। বর্তমানে আমাদের এখানে দুই শিফটে দিনরাত বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ চলছে।
কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সরকার মোশারফ হোসেন জয় জানান, সফিপুর ফ্লাইওভারটি অত্র এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। ফ্লাইওভার নির্মিত হলে উন্নয়নে ভিন্ন মাত্রা যোগ হবে। পাশাপাশি যানযট দূর হবে। এই আধুনিক ফ্লাইওভারটি শিল্পাঞ্চল খ্যাত সফিপুরে নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি কে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।