নতুন রাস্তা পেয়ে খুশি গ্রামবাসী
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের অবহেলিত একটি গ্রামের নাম জিকাতলী পাড়া।গ্রামে প্রায় চার হাজার লোকের বসবাস। জিকাতলী পাড়া খালের পূর্ব পাড়ের দুইশত মানুষের জমির আইল ধরে চলতে হতো।
বিগত বছরগুলোতে কোনো জনপ্রতিনিধিরাও রাস্তাটি করার ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ ছিল এলাকাবাসীর।
অবশেষে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উদ্যোগে গ্রামবাসী পেয়েছে তাদের স্বপ্নের রাস্তা। নতুন রাস্তা পেয়ে খুশি এলাকাবাসী।
জানা যায়, রাস্তা না থাকায় গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে নানা সমস্যায় পড়তে হতো তাদের।রাস্তা না থাকায় কৃষি পণ্যের সঠিক মূল্যে পাওয়া যেতো না। কৃষি ফসল গুলো মাথায় করে জমির আইল ধরে নিয়ে যেতো হতো বাজারে। বর্ষার সময় নৌকা আর শুকনো মৌসুমে জমির আইল ধরে তাদের চলতে হয়। ছেলে-মেয়েদের বিদ্যালয়ে যেতে পড়তে হতো নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে। বর্ষা মৌসূমে চলাচলের দুর্ভোগ বেড়ে যেত দ্বিগুন।
কলেজ পড়ুয়া অজয় সরকার বলেন, রাস্তা না থাকায় আমাদের উপজেলায় যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এখন রাস্তা হলে সহজেই আমরা উপজেলাই যেতে পারবো। কোনো মানুষ অসুস্থ হলে কষ্ট হতো। রাস্তা হলে সহজেই একজন অসুস্থ মানুষকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া যাবে।
জিকাতলীপাড়া গ্রামের মনোরঞ্জন সরকার বলেন, স্বাধীনতার পর রাস্তায় কাজ করা হয়নি। অনেক চেয়ারম্যান গেছে রাস্তার কাজ করে নাই।এই চেয়ারম্যান আইসা রাস্তার কাজ করতেছে। রাস্তা ছিল না এক মণ ধান বিক্রি করতে পারতাম না।মাথায় করে জমির আইল ধরে ধান নিতে হতো।রাস্তা হলে সহজেই যেকোনো কাজ করতে পারবো।একজন মানুষ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়া যেতো না।রাস্তা হলে সহজেই হাসপাতালে নিয়ে নেওয়া যাবে।চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানাই।
জিকাতলীপাড়া গ্রামের প্রদীপ সরকার বলেন,১০০ বছরেও এই এলাকায় উন্নয়ন হয়নি। আমাদের চেয়ারম্যান আমাদের যে উপকার করতেছে তা আমরা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। আমাদের অনেক আত্বীয়-স্বজন আছে তারা আমাদের এলাকায় আসতো না।রাস্তা হলে আমাদের অনেক সুবিধা হবে।
স্থানীয় সনিজিত সরকার বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম জমির আইল ধরে স্কুলে যেতাম।এই রাস্তা হলে আমাদের ছোট ভাইরা রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতে পারবে।বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে গেলে রাস্তা নেই বলে বিয়ের কাজ ভেঙ্গে যেতো।রাস্তা হলে আমাদের আর কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না।
কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আল মামুন বলেন, আমি নির্বাচনের আগে এই এলাকার মানুষের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলাম। স্বাধীনতার ৫২ বছর পর তাদের যে প্রতিক্ষা আমি পূরণ করে দিবো। তার ধারাবাহিকতায় নিজ উদ্যোগে ও নিজ অর্থায়নে চার কিলোমিটার রাস্তার কাজ শুরু করি। রাস্তার কাজ প্রায় শেষের দিকে।এই এলাকায় রাস্তা না থাকায় এলাকার মানুষদের দুর্ভোগ পোহাতে হতো।এই এলাকাটি কৃষি এলাকা প্রচুর সরিষা ধান উৎপাদন হয়।তাদের অনেক কষ্ট করে ফসল গুলো বিক্রি করতে হয়। এই এলাকায় চার হাজার লোকের বসবাস।অসুস্থ মানুষকে কষ্ট করে উপজেলায় নিয়ে যেতে হতো।এই রাস্তাটি হলে এই এলাকার মানুষদের দুর্ভোগটা দূর হবে। উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছি খালের উপর কালভার্ট করে দেওয়ার জন্য।