সুনামগঞ্জে এক সাংবাদিককে গাছে বেঁধে নির্যাতন

আলোকিতপ্রজন্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:২৬ পিএম, সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | ২৩৪

অবৈধভাবে ‘নদীর পাড় কেটে’ বালু উত্তোলনের ছবি তুলতে গেলে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে কামাল হোসেন (৩০) নামের এক সাংবাদিককে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করেছে স্থানীয় এক বালু-পাথর ব্যবসায়ী চক্র।  

আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার যাদুকাটা নদীর পাড়ের ঘাগটিয়াবাজারে এ ঘটনা ঘটে। গাছের সাথে বেধে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে নির্যাতনকারীদের একজনকে বলতে শোনা যায়, দেশের মানুষ অসহায়, মানুষ কাম কইরা খাইতে পারে না, চুরি কইরা খাইবো (খাবে)?

এসময় তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে আরেকজনকে বলতে শোনা যায়, নিজের বাপ দাদার সম্পদ ভাইঙা (ভেঙে) ভাত খাইতো পারের না, আর তোরা আইয়া ফটু (ফটো) তুলি নিয়া যাছ।

এসময় নির্যাতনে কাতর ওই সাংবাদিক কয়েকজনকে হাতের বাঁধন খুলে দিতে আকুতি জানাতে শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘একটু ডিল (ঢিলে) করে দে। আমি চুর (চোর) না, আমারে এরখম (এমন) করে বাঁধবেন না।’ 

এসময় একজন তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য বলতে শোনা যায়। পরে ওই সাংবাদিক তাকে বসতে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান। এসময় আশপাশে প্রায় অর্ধশত মানুষ উপস্থিত ছিলেন ধারণা করা যায়।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যাদুকাটা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সংবাদ পেয়ে সাংবাদিক কামাল হোসেন ছবি তুলতে যান। এসময় স্থানীয় ঘাগটিয়া গ্রামের রইস মিয়া ও দ্বীন ইসলামের নেতৃত্বে একটি বালু ব্যবসায়ীদের চক্র তার ওপর হামলা করে আহতবস্থায় টেনে হিঁছড়ে ঘাগটিয়াবাজারে এনে গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করেন। 

স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে খবর পেয়ে উপজেলার বাদাঘাট ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। আহত সাংবাদিকের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক। 

সাংবাদিক কামাল হোসেন জানান, যাদুকাটা নদীতে তীর কেটে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের ছবি তুলতে গেলে বালু খেকো ঘাগটিয়া গ্রামের রইস মিয়া, দ্বিন ইসলাম, মাহমুদুল ইসলামসহ একটি চক্ররা তার উপর হামলা করে তাকে মারাত্মক আহত করেন। এসময় তার সাথে থাকা মোবাইল, ক্যামেরা ও মোটরসাইকেল তারা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মাহমুদুল হাসান বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে তাহিরপুর হাসপাতালে ভর্তি করি। তার কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোনটি উদ্ধারের চেষ্টা করছি। এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।