‘ব্ল্যাক বেঙ্গল গট’ পালন করে সাবলম্বী আদিবাসী চপলা

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: ০৪:১৮ পিএম, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ৬৩৭

বিধবা চপলা রানী। আদিবাসি সম্প্রদায়ের এক সংগ্রামী নারী। স্বামী মন্টু কুমার বহু আগেই মারা গেছেন। তিন সন্তানের মধ্যে ছোট ছেলে থাকে ভারতে। বাকী দুই ছেলে আনন্দ ও অশোক কুমারকে নিয়ে চপলা বসবাস করেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুঠিদুর্গাপুর গ্রামে।

সংগ্রাম করে জীবন চালানো চপলা রানী ‘ব্লাক বেঙ্গল গট’ জাতের ছাগল পালন করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন।

সভ্যতার উন্নতর শিখরে মানুষ যখন আরাম আয়েশ নিয়ে ব্যাস্ত, চপলা তখন এক পাল ছাগল নিয়ে ঘোরেন বনবাদাড়ে। এই ছাগল তার সন্তানের মতো। অসুখ বিসুখ হলে নিজেই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।

১০ বছর ধরে ছাগল পালন করে চলা চপলার বর্তমান ছাগলের সংখ্যা প্রায় অর্ধশত।

প্রতিদিন সকালে নিজের দুপুরের খাবার কাঁধে বেঁধে বাড়ি থেকে ছাগল চড়াতে বেরিয়ে পড়েন ৬৫ বছরের চপলা।

মাঠে ঘাস খেয়ে ছাগলগুলো তৃপ্ত হলেই বাড়ি ফেরেন সন্ধ্যা নাগাদ।

এতে তার কোন ক্লান্তি নেই, নেই লাজ লজ্জা। এই ছাগল বিক্রি করেই ছেলেদের মাঠে জমি কিনে দিয়েছেন তিনি।

ছাগল পালনের সংগ্রাম করে জীবিকা চালানো চপলা তাই এলকায় পরিচিত কর্মপ্রিয় নারী হিসেবে।

এক দপুরে সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের শৈলমারী বাজারে চপলা রানীর সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।

পান চিবুতে চিবুতে চপলা তার ছাগল পালনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বললেন, পরের ক্ষেতে তিনি ছাগল চরিয়ে বেড়াচ্ছেন আজ ১০ বছর। কোন সমস্য হয়নি। সবাই তাকে ভালবাসেন। তার ছাগলের পাল কারো ফসলের ক্ষতি করেন না।

গান্না ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান লিটন বিশ্বাস বলেন, চপলা রানী দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ছাগল পালন করে আত্মনির্ভরশীলতার নজীর গড়ে তুলেছেন। তার মতো সমাজের সুবিধা বঞ্চিত সব নারীরা যদি আত্ননির্ভরশীলতার চেষ্টা করে, পরিশ্রম করে, তবে তারা অবশ্যই হয়তো সফল হতে পারবে।