চীনে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে শৃঙ্খলা বাহিনী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৪২ পিএম, বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০২২ | ৩৭৭

চীনে করোনাভাইরাস বিধি-নিষেধবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে গেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এতে করে দেশটির সাংহাই ও বেইজিংয়ে গত কয়েক দিনের তুলনায় বিক্ষোভ কিছুটা মন্থর হয়ে গেছে।

বিবিসি জানিয়েছে, বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের কাছে ফোনকল যাচ্ছে। পুলিশ পরিচয়ে তাদের কাছে ফোন যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনেকে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় যেসব স্থানে জমায়েত হতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল;  সেসব স্থানে গতকাল মঙ্গলবার পুলিশকে টহল দিতে দেখা গেছে। সোমবার দিবাগত রাতে হাংজু শহরে ছোট আকারের বিক্ষোভ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ হানা দেয়। সেখান থেকে বিক্ষোভকারীদের কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে।

বেইজিংয়ের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বিবিসিকে জানিয়েছেন, তাদের ফোন করে অবস্থান জানতে চেয়েছে পুলিশ। নিরাপত্তা বাহিনী ঠিক কিভাবে তাদের শনাক্ত করেছে, বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানা যায়নি।

লোকজনের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে যাচাই করে দেখছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মোবাইলে ভিপিএন, টেলিগ্রাম বা টুইটারের মতো অ্যাপ রয়েছে কি না তা পরীক্ষা করা হচ্ছে।

সাংহাইয়ে করোনাভাইরাস বিধি-নিষেধবিরোধী বিক্ষোভ চলা অবস্থায় বিবিসির একজন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে নির্যাতনেরও অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার জেরে লন্ডনে চীনা রাষ্ট্রদূত ঝেং ঝেগুয়াংকে ডেকে পাঠিয়েছে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার চীনা রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এ ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। ঘটনাকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি ‘গভীর উদ্বেগজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। সাংবাদিকদের যেকোনো হুমকি ও আতঙ্ক ছাড়াই কাজ চালিয়ে যেতে পারা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

গত রবিবার রাতে সাংহাইয়ে বিক্ষোভ চলা অবস্থায় চীনা পুলিশ খবর সংগ্রহকারী বিবিসির সাংবাদিক লরেন্সকে আটক করে। পরে বিবিসি জানায়, মুক্তি দেওয়ার আগে পুলিশ তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেছে।

ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন কর্মকর্তা এ ঘটনাকে ‘পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য’ বলেছেন। তবে চীন সরকারের দাবি, সাংবাদিক লরেন্স নিজ থেকে তাঁর সংবাদপত্রের পরিচয়পত্র দেখাননি।

স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, লরেন্সকে মাটিতে চেপে ধরেছে কয়েকজন পুলিশ সদস্য। বিবিসি জানিয়েছে, পুলিশ তাঁকে মারধর করেছে, লাথি দিয়েছে এবং হাতকড়া পরিয়ে ধরে নিয়ে গেছে। কোনো সাংবাদিকের সঙ্গে এমন আচরণ ‘চরম উদ্বেগজনক’ বলে বর্ণনা করেছে বিবিসি।

ব্রিটেনের হাউস অব কমন্সে পররাষ্ট্রবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ডেভিড রুটলি বলেছেন, এ ধরনের অগ্রহণযোগ্য এবং অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে পরিষ্কার বার্তা দিতে চীনের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। এর পূর্ণ ও পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা দরকার।

সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স।