১১ বছরে সড়কে ঝরেছে প্রায় ৮৭ হাজার প্রাণ: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
দেশে গত ১১ বছরে ৬২ হাজার ৬১৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৮৬ হাজার ৬৯০ জন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৫৭ জন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক পর্যবেক্ষণে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় এ তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের হিসেবে অসহনীয় যানজটে প্রতিদিন কেবল রাজধানীতে ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। যার আর্থিক ক্ষতি ৯৮ হাজার কোটি টাকা। জ্বালানি অপচয় হয় প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ যানজটে সময় ও আর্থিক ক্ষতি হিসাব করা গেলেও এর কারণে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যগত ক্ষতি কয়েকগুণ বেশি। দীর্ঘক্ষণ যানজটে পড়ে নাগরিকদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে ও উদ্বেগ বাড়ছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুস ক্যান্সার, শ্বাসকষ্ট, কিডনি, হৃদযন্ত্র ও প্রজননতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা, যানজট ও বিশৃঙ্খলা রোধে ২০১৮ সালে প্রণীত সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়নে যাত্রী ও নাগরিক সমাজের মতামত উপেক্ষা করায় এসব সমস্যার সমাধান দিতে পারেনি। উন্নত গণপরিবহনের অভাবে দেশে রাইড শেয়ারিং মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, অটোরিক্সার মতো ছোট ছোট যানবাহন প্রধান বাহনে পরিণত হয়েছে। ৫৬ শতাংশ মানুষ বাধ্য হয়ে প্রাইভেট পরিবহন ব্যবহার করছে।
পরিবহনে দুর্নীতি ও ভুল নীতির ফলে যানজট এখন নগর, বন্দর পেরিয়ে গ্রামেগঞ্জেও ছড়িয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সড়কে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি বন্ধ করা ও যানজটের ভোগান্তি লাঘবের কৌশল থেকে স্ব-স্ব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনি ইশতেহারে অর্ন্তভুক্ত করার দাবি জানান তিনি।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এবি পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য দীপক রায়, জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, সংগঠনের সাবেক চেয়ারম্যান শরিফ রফিকুজ্জামান প্রমুখ।
সুত্র:বণিক বার্তা
