টাঙ্গাইল পার্ক বাজারে লিখিত নোর্টিস ছাড়াই মৌখিকভাবে দোকান উচ্ছেদের নির্দেশ

স্টার্ফ রিপোটার
প্রকাশিত: ০৬:৪০ পিএম, রোববার, ১৪ জুন ২০২০ | ৪৪২

টাঙ্গাইল পৌর এলাকার পার্ক বাজারে বৈধ চুক্তি পত্র থাকার পরও কোন প্রকার লিখিত নোর্টিস ছাড়াই একটি দোকান মালিককে উচ্ছেদের মৌখিক নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার(১১ জুন) দুপুরে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) উপমা ফারিসা এই মৌখিক নির্দেশ দেন।

বৈশ্বিক মহামারী করোনায় প্রভাবে মানুষ যখন জীবন-জীবিকা নির্বাহে হিমসিম খাচ্ছে, তখন এই ধরনের উচ্ছেদ প্রক্রিয়া পার্ক বাজারের সাধারন ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃস্টি করেছে ।

জানা গেছে, পার্ক বাজারের দক্ষিন দিকের প্রবেশ মুখে ৫২০ নং দোকানটি(১৫ বর্গমিটার) ২০১৫ সালে ঝুনু বেগমের নামে সরকারী নিয়ন-নীতি মেনেই বরাদ্দ দেওয়া হয়।বিগত পাঁচ বছর যাবদ ঝুনু বেগম এই দোকানে পেয়াজ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। দোকানের ট্রেড লাইসেন্স, বিদ্যুৎ বিল সহ প্রয়োজনীয় সব দলিল-পত্র ঝুনু বেগমের নামে রয়েছে। এমনকি কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কৃষি পন্যের ব্যবসা/ পেশা পরিচালনার লাইসেন্স রয়েছে তার।এই বছর হঠাৎ করেই কোন প্রকার নোর্টিশ ছাড়াই দোকান ছাড়ার মৌখিক নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাকে। 

এ প্রসঙ্গে ঝুনু বেগম বলেন, এই জায়গাটি খালি ছিল। বরাদ্দ পাওয়ার পর অনেক টাকা ব্যয় করে ঘর তুলেছি। হঠাৎ করে করোনা মহামারির সময় দোকান ছাড়ার মৌখিক নির্দেশ পেয়ে, আমি অসহায় হয়ে পড়েছি। একজন মহিলা হয়ে জীবনের প্রয়োজনে দোকান করে সংসার চালাচ্ছি। এখন কি ভাবে সংসার চলবে সেটা ভেবে পাচ্ছি না।নোর্টিসের কথা শুনে স্বামী আমাকে বাবার বাড়ী পাঠিয়ে দিয়েছে। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী যখন সর্বক্ষেত্রে মহিলাদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে, সেখানে কেন আমার দোকান বরাদ্দ বাতিল করে অন্য জনকে দেয়া হলো বুঝতে পারছি না।লিখিত নোর্টিস চাওয়ার পরও আমাকে দোকান ছাড়ার কোন প্রকার লিখিত নোর্টিস দেওয়া হয়নি। 

পার্ক বাজারের দোকানী সামছুল হক বলেন, গত ৪০ বছর ধরে পার্ক বাজারে ব্যবসা করে আসছি। কোন দিন এই ধরনের মৌখিক নির্দেশে দোকান মালিককে উচ্ছেদ করতে দেখিনি। এক জন মহিলাকে বিনা নোর্টিসে উচ্ছেদ সঠিক হচ্ছে না। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।   

টাঙ্গাইল পার্ক বাজার কমিটির সভাপতি  মোঃ  আঃ বারেক মিঞা  বলেন, পার্ক বাজার পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে সভা করে ঝুনু বেগমের দোকান বরাদ্দ যেন বহাল থাকে সেই জন্য রেজ্যুলেশন করে এসিল্যান্ড অফিস, জেলা প্রশাসনেক কার্যালয়ে  জমা দেওয়া হয়েছে। তার পরও কেন দোকান ছাড়ার মৌখিক নির্দেশ দেয়া হলো, বুঝতে পারলাম না। লিখিত নোর্টিশ পেলেই, আমরা আইনগত লড়াই করবো।  

এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) উপমা ফারিসা বলেন,দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয় বছর ভিত্তিক। প্রতি বছর চুক্তি নবায়ন করা হয়। এ বছর  চুক্তির বিভিন্ন ধারা ভঙ্গের কারনে ঝুনু বেগমের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।

তিনি নিজে দোকান না করে ভাড়া দিয়েছেন। যেটা চুক্তির পরিপন্থি। তারপরও যদি তিনি নবায়নের জন্য আবেদন করেন, সেটা বিবেচনা করে দেখা হবে।