শার্শা-১ আসনে ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবে

নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শেখ আফিল উদ্দিন

শার্শা (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৬:৪০ পিএম, বুধবার, ৫ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৬১৫

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র বাকি ২৪ দিন। সম্প্রতি যাচাই বাছাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। আর মাত্র ৫ দিন পর নির্বাচনের জোয়ার গড়াবে মাঠে। প্রার্থীরা দ্বারে দ্বারে ঘুরবে ভোটারদের।

বরাবরের মত এবারের নির্বাচন ও হবে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে। তবে যশোরÑ৮৫ শার্শা -১ আসনে নির্বাচনের হাওয়া চলছে সম্পুর্ন ভিন্ন রুপে। এখানে ৬ জন প্রার্থী মনোনায়ন জমা দেওয়ার পর বাছাই পর্বের জাকের পার্টির সাজেদুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা আজিজুর রহমানের মনোনায়ন পত্র নির্বাচন অফিসার ত্রুটি থাকায় বাতিল বলে ঘোষনা করেছেন।

এ আসনে আওয়ামীলীগের এক মাত্র প্রার্থী ৪ বারের মনোনায়ন পাওয়া এবং ২ বারের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন দল থেকে মনোনায়ন জমা দিয়েছে। তার বিকল্প দল থেকে ও কোন নেতা প্রার্থী বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে ও নির্বাচন করছে না। অপরদিকে বিএনপির আভ্যন্তরীন দ্বন্দ ও দল থেকে বাদ পড়া সংস্কার পন্থী নেতা সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় সাবেক বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে বিএনপি মনোনায়ন দিয়েছে। তবে তার সাথে শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক হাসান জহিরকে ও মনোনায়ন দিয়েছে এ আসনে দলটি। এ ছাড়া এ আসনে ইসলামি শাসনতন্ত্রের বখতিয়ার নামে একজন প্রার্থী মনোনায়ন পত্র জমা দিয়েছে।

যশোরের শার্শা  ১ আসন ১১ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। ভোটার সংখ্য আছে মোট ২, ৬৩,৬৮৮ জন। এর ভিতর পুরুষ সংখ্যা ১,৩১,৫৩৩ জন ও নারী ভোটার সংখ্যা ১, ৩২, ১৫৫ জন।

সীমান্তের এ আসনটি যশোরের অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন। এ আসনের হাটবাজার গ্রাম গঞ্জ মাঠে ঘাটে পথে প্রান্তরে সম্প্রতি সরোজমিন ঘুরে দেখা গেছে ভোটাররা বার বার নির্বাচিত শেখ আফিল উদ্দিনকে ভোট দিতে সম্মতি প্রকাশ করেছে। ভোটারদের অভিমত আওয়ামীলীগের এ সংসদ সদস্য এলাকায় সুখ দুঃখে নেতা কর্মীদের পাশে একাধারে ১৮ বছর রয়েছে।

এ ছাড়া সে এলাকার বেকারত্ব ঘুচাতে ও শার্শায় খুলেছে তার নিজের অর্থায়নে একটি জুট মিল। সেখানে প্রায় ৫/৭ হাজার লোকের কর্মসংস্থান। এ ছাড়া তিনি দল থেকে ২০০১ সালে মনোনায়ন পেয়ে নির্বাচন করে বিএনপি প্রার্থী আলী কদরের কাছে হেরে গেলে ও তিনি বিএনপির ঐ পাঁচ বছর শার্শার নেতা কর্মীদের ছেড়ে যায়নি। কিন্তু বিএনপির নির্বাচিত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর নেতা কর্মী থেকে স্বল্প সময়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

আওয়ামীলীগের এ আসনে আভ্যান্তরিন কোন্দল থাকলে ও তারা দলের স্বার্থে সকলে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রæতি ব্যাক্ত করেছে। এ আসনে যশোর জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে মনোনায়ন প্রত্যাশী ছিলেন।

দলের হাই কমান্ড তাকে পৌর সভা মেয়র এর দায়িত্ব থাকায় মনোনায়ন দেয় নাই। এলাকায় মেয়র সমর্থক আওয়ামীলীগের একটি গ্রুপ ও এমপি সমর্থক আওয়ামীলীগের আর একটি গ্রুপ থাকা সত্বে ও দলের স্বার্থে ১ ডিসেম্বর বেনাপোল পৌর আওয়ামীলীগ দলীয় কার্যালয়ে নেতা কর্মীদের ডেকে মেয়র লিটন দলের বিভেদ বিভাজন না দেখে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য জোর আহবান জানায়। এ সময় নেতা কর্মীরা তাকে স্বতঃস্ফুত ভাবে দলের সার্থে সমর্থন জানায়।

অপরদিকে বিএনপির আভ্যন্তরিন কোন্দল থাকা সত্বে ও এ আসনে দুইজন নেতা নির্বাচন করার জন্য মনোনায়নপত্র জমা দিয়েছে। সরোজমিন ঘুরে ভোটারদের মধ্যে বিএনপির প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার কোন আগ্রহ নেই। অনেকে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা মফিকুল হাসান তৃপ্তি এ আসনে বসন্তের কোকিলের মত আগমন ঘটেছে। তিনি গত ১০ বছর এলাকার কোন নেতা কর্মীদের সাথে যোগাযোগ না করায় তার প্রতি ভোটারদের কোন আস্থা নেই।

এ ছাড়া তিনি দলের সাথে সংস্কার পন্থী হিসাবে বাদ পড়ায় তাকে বিএনপির বেঈমান নেতা হিসাবে মন্তব্য করেন। তাছাড়া বিএনপির নেতাদের উপর এলাকায় ভোটারদের তেমন কোন আস্থা নেই। এছাড়া বিএনপির উপজেলা সাধারন সম্পাদক হাসান জহিরকে যদি দল শেষ পর্যন্ত রাখে তবে তিনি সারা উপজেলায় ৫ হাজার ভোট পাবেন কিনা তা নিয়ে ভোটারদের সংশয় রয়েছে।

পুটখালী ইউনিয়নের মেহেদী হাসান মন্তব্য করে বলেন দলের তৃনমুল পর্যন্ত শার্শার ভোটারা হাসান জহিরকে তেমন চেনে যানে না। তাছাড়া তিনি বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্বাচন করলে মেম্বার হতে পারবে না। তাই তাকে বিএনপি দাঁড় করালে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এছাড়া ইসলামি শাসনতন্ত্র থেকে বখতিয়ার নামে যে প্রার্থী মনোনায়ন জমা দিয়েছে তাকে এলাকার কোন লোক চেনে না। তার নাম কেউ শোনে নাই বা তাকে কেউ দেখে নাই বলে সাধারন ভোটাররা মন্তব্য করেন।

স্থানীয় ভাবে জরীপে দেখা গেছে এ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শেখ আফিল উদ্দিন শতকার ৭০ থেকে ৮০% ভোট পেয়ে বিজয়ী হবে । ভোট বাতিল বিএনপি প্রার্থীর ২০% ভোট পাবে বলে জনসাধারন মন্তব্য করেন।