টাঙ্গাইলে ধর্ষণের শিকার সেই স্কুলছাত্রীর সন্তান প্রসব!

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৩১ পিএম, রোববার, ২৬ আগস্ট ২০১৮ | ৭৭৯

টাঙ্গাইলে চাচা ও ভাতিজার যৌন লালসার শিকার ৭ম শ্রেণীর সেই স্কুলছাত্রী কণ্যা সন্তান প্রসব করেছে। রোববার সকাল ১০টার দিকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে তার সন্তান প্রসব হয়। বর্তমানে মা-মেয়ে উভয়ই সুস্থ আছেন। এর আগে গতকাল শনিবার ওই মেয়েটি প্রসব ব্যথা নিয়ে হাসপাতালের ভর্তি হয়। এই স্কুল ছাত্রীর বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার গিলাবাড়ি গ্রামে।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের এক নং ওয়ার্ডের এক নং বেডে ওই স্কুল ছাত্রী মেয়েকে নিয়ে শুয়ে আছেন। জন্ম নেয়া ওই শিশুটির দেখভাল করছেন স্কুল ছাত্রীর মা ও বড় বোন। পাশেই নিরবে বসে আছেন বাবা ও ভগ্নপতি মোখলেছুর রহমান। তাদের চোঁখে-মুখে শুধুই হতাশার ছাপ।

হাসপাতালে কথা হয় ছাত্রীর বাবার সাথে। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে এমনিতেই শিশু তার মধ্যে আবার আরেকটি শিশুর মা হলো। এখন এ শিশুর দায়িত্ব নেবে কে? আর পিতৃ পরিচয় কি? আমি এই মেয়েকে নিয়ে এখন কি করবো। আমি মামলা করার পরও মূল আসামি আনছের আলীকে ধরতে পারেনি পুলিশ । আসামীর পরিবারের লোকজন আমার মেয়েকে হত্যার হুমকিও দিচ্ছে। আমি কি এর কোন বিচার পাবো না। নাকি আমি গরীব বলে বিচার পাওয়ার অধিকার আমার নাই?’

এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালিহাতী থানার এসআই মনির হোসেন বলেন, স্কুল ছাত্রীর বাচ্চা প্রসবের বিষয়টি আমি শুনেছি। মামলাটি একটু জটিল। ইতিমধ্যে মামলার এক আসামী শরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ঘটনায় পলাতক প্রধান আসামী আনছের আলীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, দরিদ্র হওয়ার কারণে কালিহাতী উপজেলার গিলাবাড়ি গ্রামের আনছের আলীর বাসায় কাজ করতো ওই স্কুল ছাত্রী। কাজের সুবাধে আনছের আলী ওই স্কুল ছাত্রীকে নিয়মিত ধর্ষণ করতো। ধর্ষণ করার সময় ঘটনাটি দেখে ফেলে তারই আপন বড় ভাই মুনসব আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম পরে শরিফুল ঘটনাটি লোকজনের কাছে বলে দেয়ার ভয় দেখিয়ে সেও মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। হত্যার ভয় দেখিয়ে ও কাউকে কিছু না বলতে ওই মেয়েকে নিষেধ করে দেয় আনছের আলী ও শরিফুল।

পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে চাচা-ভাতিজা প্রায়ই তাকে ধর্ষণ করতো। ধর্ষণের ফলে সে অন্তঃসত্বা হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর পিতা বাদি হয়ে ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর আদালতে আনছের আলী ও শরিফুলের নাম উল্লেখ করে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে ওই স্কুল ছাত্রী। শরিফুলকে আটক করেছে কালিহাতী থানা পুলিশ। তবে ঢাকায় অবস্থান করায় ঘটনার মূলহোতা আনছের আলীকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।