শিশু কন্যাকে নিরাপদ রাখতে করণীয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৪৮ পিএম, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫ | ১০৭

আজকের কন্যাশিশুরা আগামী দিনের আদর্শ নাগরিক। আমাদের সমাজে শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী, মধ্যবিত্ত, গরিব প্রায় সব পরিবারে দেখা যায়, কন্যাশিশুর প্রতি অন্য রকম দৃষ্টিভঙ্গি ও বৈষম্যমূলক আচরণ। তারা এই বৈষম্যমূলক আচরণের মধ্যে বেড়ে ওঠে। কিছু সামাজিক কথিত নীতির কারণে শিশুকাল থেকেই কন্যাশিশুদের এমনভাবে গড়ে তোলা হয়, যাতে তারা প্রতিবাদী হতে না শেখে। এতে সে যদি পরিবারের ভেতরে যৌন হয়রানির শিকার হয়, সেই কথাও কারও কাছে মুখ ফুটে বলতে পারে না। শৈশবের এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা তাকে মানসিকভাবে ট্রমায় ফেলে দেয়। তাই কন্যাশিশুকে নিরাপত্তা দিতে হবে।

আজ (৮ অক্টোবর) জাতীয় কন্যাশিশু দিবস। চলুন জেনে নেওয়া যাক কন্যাশিশুর নিরাপত্তা সম্পর্কে যেভাবে সচেতন থাকবেন-

১. দূরত্ব বজায় রাখা

শিশুকে শেখাতে হবে বাবা-মা, ভাইবোন ছাড়া অন্য যে কারও কাছ থেকে কতটুকু দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তাকে বোঝাতে হবে কোন ব্যক্তি কতটুকু তার কাছে আসতে পারবে এবং সে কার কাছে কতটুকু যেতে পারবে।

২. শরীরের অংশের পার্থক্য শেখানো

কন্যাশিশুকে শরীরের বিভিন্ন অংশ সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিতে হবে। কোন অংশ স্পর্শ করা নিরাপদ এবং কোনটি নয়, তা বোঝানোর জন্য বাবা-মাকে সহজ ভাষায় আলোচনা করা।

৩. কারও সঙ্গে একা না ছাড়া

কোনো আত্মীয় বা পরিচিত কারও সঙ্গে কখনোই শিশুকে একা কোথাও যেতে দেওয়া যাবে না। তাকে কারও কাছে রেখে কোথাও যাওয়াও যাবে না। এমনকি স্কুল থেকে আনা নেওয়া করার জন্য পুরোনো ড্রাইভারকেও দায়িত্ব দেওয়া যাবে না।

৪. শিশুর আচরণে মনোযোগ দেওয়া

শিশুর আচরণের দিকেও মনোযোগ দিন। কোনো আত্মীয়র প্রতি শিশুর বিরূপ মনোভাব দেখলে সাবধান হয়ে যান এবং এর কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। তার কাছে যেতে শিশুটি অস্বস্তিবোধ করে কিংবা তাকে দেখে ভয় পেয়ে কেঁদে ফেলে, তাহলে তাকে জোর না করে, সুন্দরভাবে কথা বলে কারণ জানার চেষ্টা করতে হবে।

৫. কথা গোপন না করা

কন্যাশিশুকে বোঝাতে হবে, কেউ যদি তাকে খারাপ স্পর্শ করে এবং সেটা গোপন রাখতে বলে, তবে সেটি ভুল। সে সবসময় বাবা-মাকে সবকিছু বলতে পারবে এবং বাবা-মা সবসময় তার পাশে থাকবে।

৬. ভালোবাসা প্রকাশ করতে হবে

অনেক বাবা-মা শিশুর প্রতি ভালোবাসা কাজে তা প্রকাশ পেলেও মুখে তা প্রকাশ করেন না। যে কোনো ধরনের অনুভূতি শিশুর কাছে প্রকাশ করতে হবে। ভালোবাসলে বলতে হবে, রাগ করলে বলতে হবে, কষ্ট পেলে বলতে হবে। এতে শিশুর সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় হবে।

৭. শিশুর প্রতি বিশ্বাস রাখা

বাবা-মা সমাজের ভালো-মন্দের বিভেদ বুঝিয়ে দিতে পারে তাহলে সন্তান আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে। নিজে কিছু করার বিশ্বাস পাবে। শিশুকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে। তাহলেই সে বন্ধুর মতো সবকিছু বলতে পারবে।

৮. অনলাইনে সাবধান থাকা

অনলাইনে কন্যাশিশু কারও দ্বারা বুলিং বা হয়রানির শিকার হলে, কখনোই তাকে দোষ দেওয়া যাবে না। শিশু অস্বস্তি অনুভব করলে, চুপচাপ হয়ে গেলে বা বিরক্ত হলে তার পাশে থাকতে হবে। বুলিংয়ের শিকার হলে সে যেন লুকিয়ে না রেখে জানাতে পারে, সে ব্যাপারে তাকে আশ্বস্ত করুন। তাকে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট চিনতে শেখাতে হবে। এছাড়া বিশ্বাসযোগ্য সূত্র চিনতে সাহায্য করুন।

সূত্র: মিডিয়াম,ইউনিসেফ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়