প্রেস সচিব

রাজধানী ছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলে আয়নাঘর ছিল

আলোকিতপ্রজন্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:১৮ পিএম, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | ৯৪

রাজধানী ঢাকা ছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলে আয়নাঘর ছিল বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, গুম কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী এবং নিরাপত্তা বাহিনী যে তদন্ত করছে, তার ভিত্তিতে ধারণা করা যায় যে সারাদেশে ৭০০-৮০০ আয়নাঘর আছে এবং আরও নতুন তথ্য বের হচ্ছে। তাতে বোঝা যাচ্ছে যে এটি শুধু ঢাকায় সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ছিল। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে স্পষ্ট লেখা আছে, গুম ও খুনের সঙ্গে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা জড়িত ছিলেন, তার নির্দেশেই এগুলো হয়েছে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, অপূর্ব জাহাঙ্গীরসহ প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শফিকুল আলম বলেন, আমরা তিনটি লোকেশনের আয়নাঘর পরিদর্শন করেছি। এর মধ্যে দুটি র‌্যাবের এবং একটি ডিজিএফআইয়ের। সেখানে কীভাবে বন্দি রাখা হতো, নির্যাতন করা হতো, কীভাবে সিন তৈরি করা হয়েছে, কেউ কেউ সেখানে ৭-৮ বছর কাটিয়েছেন— তার বিবরণ আসলে প্রকাশ করার মতো নয়। এ পরিদর্শনের মাধ্যমে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রধান উপদেষ্টা প্রতিটি স্থানে গিয়েছেন। সেখানে যারা বন্দি ছিলেন, তারা তাদের সঙ্গে হওয়া ঘটনাগুলো প্রধান উপদেষ্টাকে বর্ণনা করেছেন। আমরা সেখানে সবাইকে নিয়ে যেতে পারিনি, এজন্য আমরা অত্যন্ত দুঃখিত। তবে বিটিভির মাধ্যমে সবকিছু ভিডিও করা হয়েছে। আমাদের সঙ্গে শুধু দুটি মিডিয়া আউটলেট ছিল।

প্রেস সচিব বলেন, আমরা যে জায়গাগুলোতে গিয়েছি, সেগুলো খুবই ছোট ছোট কক্ষ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে ইট ভেঙে সংযোগপথ (প্যাসেজ) তৈরি করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি আসলে লজিস্টিক্যালি জটিল। আমাদের পরিকল্পনা ছিল, বিটিভি থেকে দুটি ক্যামেরাম্যান, পিআইডি থেকে একজন ফটোগ্রাফার এবং আমাদের নিজস্ব প্রেস উইংয়ের একজন ফটোগ্রাফারকে নেয়া। এছাড়া, আল জাজিরা ও নেত্র নিউজকে সঙ্গে নেওয়া হয়েছিল। আয়নাঘরের বিষয়ে নেত্র নিউজের যথেষ্ট অবদান আছে। তারা এটি নিয়ে প্রতিবেদন করেছিল, তাই তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া একজন সাংবাদিকও ছিলেন। এর বাইরে আমরা কাউকে নিতে পারিনি, কারণ লজিস্টিক্যালি এটি খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল।

আলামত নষ্ট করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আলামত নষ্ট করা হয়েছে কি হয়নি, সেটি গুম কমিশন দেখছে। যেসব মামলা হচ্ছে, সেগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটররাও পর্যবেক্ষণ করছেন। প্রতিটি আয়নাঘর প্রমাণ হিসেবে সিলগালা করা থাকবে, কারণ আমাদের আইনি প্রক্রিয়ায় সময় লাগবে। গুম কমিশন বলবে আদৌ আলামত নষ্ট হয়েছে কি হয়নি। কিছু কিছু জায়গায় দেখা গেছে যে প্লাস্টার করা হয়েছে, কিছু কিছু জায়গায় ছোট কক্ষগুলোর দেয়াল ভেঙে বড় দেখানো হয়েছে। এটি ইচ্ছাকৃত, নাকি স্বাভাবিক সংস্কার— তা গুম কমিশন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বিচার করবে।

সুত্র:বণিক বার্তা