গত বছর ধনকুবেরদের সম্পদ বেড়েছে দুই লাখ কোটি ডলার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:০৮ পিএম, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫ | ১১৩

২০২৪ সালে ধনকুবেরদের সম্পদের পরিমাণ দুই লাখ কোটি মার্কিন ডলার বেড়েছে। যা আগের বছরের তুলনায় তিন গুণ দ্রুত হারে বেড়েছে বলে অক্সফামের প্রতিবেদনে ‍উঠে এসেছে। এ সময় প্রতিদিন গড়ে তাদের ৫৭০ কোটি ডলার সম্পদ বেড়েছে।

 

সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে শতকোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৬৯ জনে। ২০২৩ সালে সংখ্যাটি ছিল ২ হাজার ৫৬৫ জন। এ সময়ে সম্মিলিতভাবে তাদের সম্পদ ১৩ লাখ কোটি ডলার থেকে বেড়ে ১৫ লাখ কোটি ডলার হয়েছে।

অক্সফাম তাদের ‘টেকার্স নট মেকার্স’ শিরোনামের এ প্রতিবেদনে ঔপনিবেশিক আমলে ধনী দেশগুলো কীভাবে তাদের উপনিবেশ থেকে সম্পদ আহরণ করেছে, তার উদাহরণও দিয়েছে।

এসব ধনী বিশেষ করে ইউরোপের ধনীদের বড় অংশের সম্পদের একটি অংশ তারা ঔপনিবেশিক আমলে পেয়েছে। যেমন ফ্রান্সের ‘মিডিয়া মোগল’ ভিনসেন্ট বোলোরের সম্পদ। তার সম্পদের একটি অংশ এসেছে ঔপনিবেশিক আমলে আফ্রিকায় নানা কোম্পানির আয় থেকে।

আজও এভাবে সম্পদের শোষণ চলছে বলে অক্সফাম জানিয়েছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ শোষণের মাধ্যমে পৃথিবীর দক্ষিণাঞ্চলের দেশগুলো থেকে বিশাল অংকের অর্থ এখনো পৃথিবীর পশ্চিম ও উত্তরের দেশ এবং ওই সব দেশের ধনাঢ্য নাগরিকের হাতে চলে যাচ্ছে।

বিশ্বের মোট সম্পদের ৬৯ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ এই উত্তরের দেশগুলোর হাতে। শতকোটিপতিদের মোট সম্পদের ৭৭ শতাংশ এসব দেশে। ৬৮ শতাংশ শতকোটিপতি উত্তরের দেশগুলোতে বসবাস করেন। অথচ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার মাত্র ২১ শতাংশ ওই সব দেশে বসবাস করে।

কীভাবে ধনকুবেরদের এ সম্পদের পাহাড় গড়া আটকে ধনী-গরিবের মধ্যে বৈষম্য কমিয়ে আনা যায়, সে পরামর্শও দিয়েছে অক্সফাম।

অক্সফামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারকে নিজ দেশ এবং বৈশ্বিকভাবে ধনী ও গরিবের মধ্যে আয়ের ব্যবধান কমাতে হবে। এ জন্য এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যেন সমাজে শীর্ষে থাকা ১০ শতাংশ মানুষের আয় সমাজের নিম্ন আয়ের ৪০ শতাংশ মানুষের আয়কে ছাড়িয়ে যেতে না পারে। বিশ্বব্যাংকের মতে, আয়ের বৈষম্য দূর করা সম্ভব হলে তিন গুণ বেশি গতিতে দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব হবে।

ধনীদের কাছ থেকে আরো কর আদায় করে তাদের অতিরিক্ত ধনী হওয়া আটকানো যেতে পারে বলে পরামর্শ দিয়েছে অক্সফাম। সংস্থাটি বলেছে, কর দিতে হয় না, এমন ‘ট্যাক্স হ্যাভেন’ বলে পরিচিত স্থান বিলুপ্ত করতে হবে। অক্সফামের বিশ্লেষকদের ভাষ্যমতে, শতকোটিপতিদের অর্ধেক এমন দেশে বসবাস করেন, যেখানে সরাসরি উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সম্পদের জন্য কর দিতে হয় না।

এছাড়া দক্ষিণের দেশগুলো থেকে উত্তরের দেশগুলোতে সম্পদের প্রবাহ থামানোর পরামর্শও দিয়েছে অক্সফাম।