হাজার হাজার নেতাকর্মীর ভালবাসায় সিক্ত এমপি ছানোয়ার

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৮:৪৮ পিএম, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩ | ১৬৯

টাঙ্গাইল সদর-৫ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. ছানোয়ার হোসেন টাঙ্গাইলের মাটিতে ফিরে  হাজার হাজার  নেতাকর্মীর ভালবাসায় সিক্ত হয়েছেন।

বুধবার সকালে টাঙ্গাইলের উদ্দেশ্য রওনা হন এমপি ছানোয়ার খবর পেয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার হাজার হাজার নেতাকর্মীর তাকে মির্জাপুর জামুর্কী এলাকায় ফুল দিয়ে স্বাগত জানায়। নেতাকর্মীদের  শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে জামুর্কী থেকে শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যান । 

টাঙ্গাইল-৫(সদর) আসনের দুইবারের বর্তমান এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছানোয়ার হোসেন এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি।যার ফলে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক সমালোচনা ও সাধারণ জনগণের মাঝে ক্ষোভের  সৃষ্টি হয়।

তিনি গত ১০ বছরে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এলাকার আওয়ামী লীগসহ জনসাধারণের সাথে রয়েছে তার নিবিড় সম্পর্ক। সবারই ধারণা ছিল তিনিই মনোনয়ন পাবেন। মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার খবর শুনেই গত দুইদিন ধরে শত শত মানুষ তার শহরের দিঘুলিয়ার তৃণমূল ভবনে জড়ো হন। বুধবার তার শহরে আগমনের খবর শুনে হাজার হাজার মানুষ শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে এসে ভীড় করতে থাকেন। ৪ হাজার মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে তাকে পৌর উদ্যানে নিয়ে আসেন। সেখানে দলীয় কর্মী জনতার উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন ছানোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, গত দুটি নির্বাচনে নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও এলাকার মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। সাধারণ মানুষ আমাকে ভালোবাসে। গত ১০ বছরে যে উন্নয়ন করেছি হাজার হাজার মানুষ আজ তার ভালোবাসা দেখিয়েছে। আজ আমি জনগণের ভালোবাসায় অভিভূত। বিগত দিনেও আপনারা যেমন আমার সাথে ছিলেন এখনও থাকবেন বলে প্রত্যাশা করি। তখন হাত উঠিয়ে হাজার হাজার মানুষ তাকে সমর্থন দেন।

ছানোয়ার হোসেন আওয়ামীলীগের এমপি হওয়া স্বত্তেও আসনটির ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নে ধারাবাহিকভাবে সুষম উন্নয়ন অব্যাহত ছিল। এ উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এ এলাকার মানুষের যুগোপযোগি জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটে। একইভাবে প্রত্যেকটি ইউনিয়নে উন্নয়ন হওয়ায় গ্রামাঞ্চালের সাধারণ মানুষের প্রিয় মানুষ হয়ে ওঠেন এমপি ছানোয়ার।

এই আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুন। এছাড়াও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকীর ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র জামিলুর রহমান মিরন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে  নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হয়ে ২৯ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন মোঃ ছানোয়ার হোসেন। এ নির্বাচনে আসনটির বিজয়ী সংসদ সদস্য হয়ে  ছানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে টাঙ্গাইলবাসির জীবনযাত্রার মানের অবিস্মরণীয় উন্নয়ন সাধিত হয়। এর মধ্যে নজির বিহীন উন্নয়ন হয় যোগাযোগ ও শিক্ষা ক্ষেত্রে।

২০১৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন পান এমপি ছানোয়ার।  এ আসনটিতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন চারজন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন আসনটির ৬ বারের সংসদ সদস্য ও বিএনপির প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী মেজর জেনারেল (অবঃ) মাহমুদুল হাসান।

অপরদিকে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন পীরজাদা সফিউল্লাহ আল মুনির ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মাথাল প্রতীকের মুরাদ সিদ্দিকী। 

এছাড়াও অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রার্থীরা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী খন্দকার ছানোয়ার হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আম প্রতীকের প্রার্থী আবু তাহের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের বটগাছ প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ খালেকুজ্জামান মোস্তফা, বিএনএফ এর টেলিভিশন প্রতীকের প্রার্থী শামীম আল মামুন ও সিংহ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কাশেম।

আসনটির ১২৭ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট গণণা শেষে  ১ লাখ ৬১ হাজার ৮০০ ভোট পেয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বেসরকারী ফলাফলে নির্বাচিত হন নৌকার প্রার্থী ছানোয়ার হোসেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মেজর জেনারেল (অবঃ) মাহমুদুল হাসান পান ৭৮ হাজার ৯’শ ৯২ ভোট, মাথাল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ সিদ্দিকী পান ২৮ হাজার ৬’শ ৭০ ভোট আর মহাজোটের লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী সফিউল্লাহ আল মুনির পান ১৮ হাজার ৩’শ ৪১ ভোট। এছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী খন্দকার ছানোয়ার হোসেন পান ৩ হাজার ৮’শ ৫ ভোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের বটগাছ প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ খালেকুজ্জামান মোস্তফা ৪’শ ১৫ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আম প্রতীকের প্রার্থী আবু তাহের পান ৯৭ ভোট, বিএনএফ এর টেলিভিশন।