কবুতর কাঁধে নিয়েই ডিউটি করেন পুলিশ কর্মকর্তা
 
												 
																			শখের বসে পালা কবুতর কাঁধে নিয়েই ডিউটি করেন সাইফুল ইসলাম নামের এক পুলিশ কর্মকর্তা। কবুতর প্রেমী পুলিশের ওই কর্মকর্তা টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার থানায় সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) পদে কর্মরত রয়েছেন।
বুধবার (২৯ জুন) বিকেলে দেলদুয়ার উপজেলার ছিলিমপুরে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনের দায়িত্ব পালনকালেও তাকে কবুতর কাঁধে নিয়েই ডিউটি করতে দেখা গেছে। পুলিশ কর্মকর্তার এমন শখ আর মাক্সি রেশ প্রজাতির ওই কবুতরটি দেখতে ভীড় জমিয়েছেন কৌতুহলী জনগণ।
দেখা গেছে, কবুতরটিকে কাঁধে নিয়ে ওই সভাস্থলে দায়িত্ব পালন করছেন সাইফুল ইসলাম। জনসমাগম বেশি হওয়ায় সভাস্থলের পাশের এক মার্কেটে তার মোটর সাইকেলে বসিয়ে রাখা হয়েছে ওই কবুতরটিকে। এ সময় অনেককেই দেখা গেছে কবুতরটির সাথে খেলা করতে।
উপজেলার আটিয়া গ্রামের আব্দুল আজিজ বলেন, প্রায়ই তাকে কবুতর কাঁধে নিয়ে ডিউটিরত অবস্থায় দেখা যায়। এটি দেখে সাধারণ মানুষ বেশ আনন্দ পায়। পুলিশের যান্ত্রিক জীবনযাপনে তার এই শখ সত্যিই প্রশংসনীয়।
দেলদুয়ার সদরের নুরুল ইসলাম বলেন, থানা পুলিশের এএসআই সাইফুলের কবুতর পালার শখ আর কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো দেখে স্থানীয়রা বেশ আনন্দ পায়। তাকে দেখে এখন স্থানীয় অনেক তরুণও কবুতর পালায় আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
কবুতর প্রেমী দেলদুয়ার থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, মাত্র নয় মাস হলো আমি দেলদুয়ার থানায় যোগদান করেছি। তবে দেড় বছর হলো আমার এই কবুতর পালার শখ জন্ম নিয়েছে। ওই শখ থেকেই আমি আমার ঢাকা জেলার ধামরাই থানার বাড়িতে কবুতর পালা শুরু করি। আমি রেশার জাতীয় কবুতরই পালতে পছন্দ করি। বর্তমানে আমার কাছে মাক্সি রেশার, সবজী রেশার ও ডিজেল রেশার কবুতর রয়েছে। বর্তমানে আমার কবুতর সংখ্যা ১৭ জোড়া।
তিনি জানান, দেলদুয়ার থানায় যোগদানের পর মাত্র তিন মাস হলো আমি এই মাক্সি রেশার কবুতরটি পালতে শুরু করেছি।
এই উপজেলার স্থানীয় এক কবুতর ব্যবসায়ির প্রজেক্টে মাক্সি রেশ প্রজাতির কবুতরের একটি ডিম দিই। সেই ডিম থেকেই এই কবুতরটির জন্ম হয়েছে। বর্তমানে কবুতরটির বয়স তিন মাস। পুরুষ কবুতরটি এখনও বাচ্চা, ছয় মাস বয়স হলে এটি সম্পূর্ণ রেশের উপযুক্ত হবে।
তিনি আরও জানান, তবে এরই মধ্যে কবুতরটি আমার এতই পোষ মেনেছে যে. সে আমার হাতের খাবার ছাড়া খায়না। আমার কাঁধে চড়ে কবুতরটি ঘুরে বেড়ালেও পোশাকে পায়খানা খুবই কম করে। আমারও কবুতরটি নিয়ে ঘুরতে বেশ ভালো লাগে। স্থানীয়রাও আমাকে দেখে আনন্দ পায়। এছাড়াও আমার কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোন আপত্তি করেননি। উনারাও কবুতরটিকে খুব পছন্দ করেন। দিনের বেলায় ডিউটি পালনকালে কবুতরটিকে কাঁধে বা মোটর সাইকেলে বসিয়ে রাখলেও রাতের বেলায় কোয়াটারে ওর ঘরে রেখে দায়িত্ব পালন করি।
কবুতরটিকে রেজা, বাজরা (ঘাসের বিচি), চিনা, কাউন, ছোলা, ডাবরি, গম, ভুট্টাসহ প্রায় ১৩ প্রকারের মিক্সার খাবার খাওয়ানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে দেলদুয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাছির উদ্দিন জানান, কবুতর পালা সাইফুলের একটি শখ। ওই শখ থেকেই সে কবুতরটি পোষেন। কবুতরটিও আমাদের খুব ভালো লাগে। কবুতর কাঁধে থাকলেও সঠিকভাবেই দায়িত্ব পালন করেন সে।
 
                         
 
             
            