‘বালুঘাটে সংঘর্ষের পর হঠাৎ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে মাইকিং করল বিবিএ’

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩:১৪ পিএম, বৃহস্পতিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২ | ১৬৩
টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-ভূঞাপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক। এ সড়কের সেতু পূর্ব গোল চত্ত্বর থেকে গোবিন্দাসী কুকাদাইর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব (বিবিএ) সাইটের আওতাধীন সেতু রক্ষা গাইউ বাঁধ রয়েছে। এর দুই পাশেই রয়েছে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বিভিন্ন দোকানপাট, বসতবাড়ি ও বালু উত্তোলনের রাস্তাসহ ও নানা স্থাপনা।
 
জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ১৫ অক্টোবর মূল সেতুর কাজ শুরু হওয়ার আগেই গাঁইড বাঁধের কাজ শেষ হয়। তখন থেকেই বিবিএ আওতাধীন গাইড বাঁধ সড়কের দু’পাশের অংশজুড়ে গড়ে ওঠে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা।
 
গাইড বাঁধ নির্মাণের পর থেকে দোকানপাট, বসতবাড়িসহ নানা স্থাপনা উচ্ছেদে বার বার মাইকিং করে আসছে বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ)। সম্প্রতি মাস কয়েক আগে সড়ক সংস্কার ও প্রস্তস্থকরণের সময় লোক দেখানো কিছু দোকানপাট ভেঙে দেন বিবিএ।
 
এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-ভূঞাপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাথাইকান্দি, সিরাজকান্দি, মাটিকাটা বাজার ও গোবিন্দাসী টি-রোড এলাকায় উচ্ছেদের মাইকিং করেন বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব (বিবিএ)। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে ওই সব স্থাপনা উচ্ছেদের কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
 
স্থানীয়রা জানায়, সেতু নির্মাণকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু সেতু-ভূঞাপুর সড়ক অংশের দুই পাশে দোকানপাট ও বসতবাড়ি করা হয়েছে। তবে, এসব স্থাপনা থেকেও মাসে টাকা নেন অনেকে। তার পরে হঠাৎ করে গত বুধবার দোকানপাট বা তাদের আওতায় সকল স্থাপনা উচ্ছেদের মাইকিং! 
 
এদিকে, বুধবার নিকরাইল ইউনিয়ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আব্দুল মতিন সরকার ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ও নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাসুদুল হক মাসুদের লোকজনদের সাথে বঙ্গবন্ধু সেতু সংলগ্ন যমুনা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বালুর ঘাট দখল নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
 
এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া গোলাগুলি ঘটনাও ঘটে। পরে ভূঞাপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে টিয়ারশেল ও লাঠি চার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
 
এরপর দুই পক্ষের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরেই বিকালে বঙ্গবন্ধু সেতু-ভূঞাপুর সড়কের টি-রোড ও কুকাদাইর পর্যন্ত দুই পাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনা উচ্ছেদে মাইকিং করছেন বিবিএ। এরআগেও সেতু কর্তৃপক্ষ মাইকিং করেছিল।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বসতবাড়ি ও দোকানের মালিকরা জানান- বুধবার মতিন ও মাসুদ গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষের পর হঠাৎ করে মাইকিং করছেন। কিন্তু এত দ্রুত সময়ের মধ্যে সরানো সম্ভব না।
 
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অ‌ফি‌সের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, আমার জানা মতে বিবিএ কর্তৃপক্ষ অবৈধ স্থাপনা বা দোকানপাট থেকে কোন ভাড়া আদায় করে না।
 
স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সড়কের দুই পাশে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া আদায় করে থাকেন। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বার বার নোটিশ দেয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে সক্ষম হব। 
 
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সেতু বিভাগের বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু সেতু (বিবিএ) সাইট অ‌ফি‌সের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ হোসাইনকে ফোন করলে তিনি কোভিড আক্রান্ত হওয়ায় বক্তব্য না দিয়ে বিবিএ দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।