১৪ দিন পর টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ চালু

স্টার্ফ রিপোটার
প্রকাশিত: ০৯:৫৪ এএম, শুক্রবার, ৩০ জুলাই ২০২১ | ২৩১

১৪ দিন পর টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) চালু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) দুপুর থেকে আইসিইউএর চারটি বেড চালু করা হয়।

বিষয়টি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. খন্দকার সাদিকুর রহমান নিশ্চিত করেছেন।

সাদিকুর রহমান বলেন, দুপুর থেকে হাসপাতালের আইসিইউ আংশিকভাবে চালু করা হয়েছে। চারটি বেডে রোগি ভর্তি হতে পারবে। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত কোন রোগি ভর্তি হয়নি। বাকি ছয়টা চালু করতেও চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ঢাকা থেকে টেকনোলজিস্ট এসে কাজ করার পর চালু করা যাবে। এখন এসি ব্যবহার করা যাবে না। জানালা খোলা রাখতে হবে। হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা সব গুলো এক সাথে ব্যবহার করতে চাচ্ছি না। দুর্ঘটনা এড়াতে ৬-৮ ঘন্টা পরপর হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা ব্যবহার করতে চাচ্ছি।

এছাড়াও বাই ব্যাপের ব্যবহার শিখিনি। ব্যবহার শিখলে বাইপ্যাপ গুলো চালু করা যাবে। অতিরিক্ত অক্সিজেনের কারনে পূণরায় যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে সে জন্য এসি বন্ধ রাখা হবে।

গত ১৫ জুলাই টাঙ্গাইলের জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে অগ্নিকান্ড ঘটে। এতে ওই দিনই আইসিইউ অকেজো হয়ে যায়। ওই দিনই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সোহানা নাসরিনকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনে জানায়, আইসিইউতে হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা মেশিনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার এবং নির্দেশনা অনুযায়ি মেশিন ব্যবহার না করার কারণে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়েছিলো। এ প্রতিবেদনে আটটি সুপারিশও করা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনের কথা নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি জানান, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তিনি তার স্বাস্থ্য মন্ত্রণলায়নের জেষ্ঠ সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা টানা ব্যবহার না করে কিছুটা সময় বিরতি দেয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে বিরতিহীনভাবে হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা ব্যবহার হয়েছে। ফলে অতিরিক্ত গরম হয়ে এতে আগুন ধরে যায়। অগ্নিকান্ডের কারণ হিসেবে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, আইসিইউ এর ভিতর অতিরিক্ত অক্সিজেন সব সময় থাকে। আইসিইউ মেশিন পরিচালনার জন্য দক্ষ কারিগরী জনবলের অভাব রয়েছে। তাই ব্যবহার নির্দেশনা অনুযায়ি মেশিন পরিচালনা করা হয়নি। এখানে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষনের অভাব এবং অতিরিক্ত আটটি হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা মেশিন প্রতিস্থাপনে দীর্ঘসূত্রিতাকে অগ্নিকান্ডের অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

বৈদ্যুতিক কোন দ্রুটি, ভোল্টেজের হ্রাস-বৃদ্ধি কিংবা শর্ট সার্কিট জনিত কারণে, এ ছাড়াও বাহ্যিক কোন দায্য পদার্থের উপস্থিতি কারণে এ অগ্নিকান্ড ঘটেনি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।  
তদন্ত প্রতিবেদনে আইসিইউ যন্ত্রপাতি অবশ্যই নিয়মিত দক্ষ টেকনিশিয়ানের মাধ্যমে রক্ষনাবেক্ষন করার জন্য একজন অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান এবং আইসিইউ এর তত্বাবধানের জন্য একজন ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও এনেসথেসিয়ান পদায়ন করার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়াও আইসিইউতে জনসাধারনের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ এবং কোনরূপ মাল্টিপ্লাগ, হিটার, চার্জার ইত্যাদি ইলেকট্রিক্যাল সরঞ্জাম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

পূণরায় আইসিইউ চালু করার জন্য আবশ্যিকভাবে সকল দিক ভালভাবে পরীক্ষা নিরিক্ষা করা এবং হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা ব্যবহারে সকল স্বাস্থ্যকর্মীদের নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।