স্ত্রীর হাতে মার খেয়ে স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা

সখীপুর (টাঙ্গাইল)সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:২৪ পিএম, মঙ্গলবার, ৩ মার্চ ২০২০ | ২৬৪

টাঙ্গাইলের সখীপুরে আশরাফ কাজী (৩৫) নামের এক সাইকেল কারখানার শ্রমিক বাবা-মায়ের সামনে স্ত্রীর হাতে মার খেয়ে লজ্জায় বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের নলুয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্বজনেরা মুমূর্ষু অবস্থায় আশরাফকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। আশরাফ কাজী উপজেলার নলুয়া গ্রামের ওমর কাজীর ছেলে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে আশরাফ আলী টাঙ্গাইল শহরে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে শাহনাজ আক্তার নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। ওই ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। গত তিন বছর আগে আশরাফ কাজী টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই এলাকায় একটি বাই সাইকেল কারখানায় কাজ নেন। ওই কারখানার নারী শ্রমিক রোকসানার প্রেমে পড়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন আশরাফ। দুজনে এক সঙ্গে কারখানার পাশে বাসা ভাড়া নেন। দ্বিতীয় বিয়ের খবর পেয়ে প্রথম স্ত্রী অভিমান করে বাপের বাড়ি চলে যায়। ১৫দিন আগে স্ত্রীর নির্যাতন সইতে না পেরে কারখানার চাকরি ফেলে আশরাফ কাজী গ্রামের বাড়ি সখীপুরের নলুয়ায় চলে আসেন। রোববার সকালে দ্বিতীয় স্ত্রী রোকসানাও স্বামী আশরাফের খোঁজে গ্রামে চলে আসেন। আশরাফ কেন ওই কারখানার চাকরি ছেড়ে দিয়ে গ্রামে আসে এর কারণ জানতে আশরাফের মা-বাবার সামনেই রোকসানা তাঁর স্বামীকে চুলে ধরে চর-থাপ্পর মারতে থাকে। এক পর্যায়ে আশরাফ ঘর থেকে কীটনাশকের বোতল এনে স্ত্রীর সামনেই খেয়ে ফেলেন। বিষ খাওয়ার সময় আশরাফ উচ্চ কণ্ঠে বাবা-মা ও ভাইয়ের কাছে স্ত্রীর দ্বারা কখন কীভাবে নির্যাতিত হয়েছেন সেসব কাহিনি বর্ণনা করতে থাকেন। এ দৃশ্য দেখে বাবা-মা ও ভাইয়েরা রোকসানার ওপর ক্ষেপে গেলে রোকসানা পালিয়ে যায়। পরে স্বজনেরা আশরাফ কাজীকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের উপ-সহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ বলেন, স্বামীর নির্যাতনে অনেক নারী বিষ পান করে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবরটি পুরনো হয়ে গেছে। স্ত্রীর নির্যাতনে পুরুষেরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে- এ খবর নতুন।

সখীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এএইচএম লুৎফুল কবির বলেন, কোনো পুরুষ স্ত্রীর হাতে নির্যাতিত হয়ে থানায় অভিযোগ করলে সেগুলোও আমলে নেওয়া হবে। তবে এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেননি।