এক হাজার টাকা ভাড়া বাকি, তাই....

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৪৬ পিএম, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২০ | ২৩৮

খুশি বেগম। বয়স ৪৮ এর কোটায়। উপার্জনের একমাত্র মাধ্যমে অন্যের বাড়িতে ঝি’এর কাজ করা। এমন একজন অসহায় মধ্যবয়সী নারীকে মাত্র বাসা ভাড়ার মাত্র এক হাজার টাকা দিতে বিলম্ব হওয়ায়, বেধরক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে তার ভাড়া বাসার মালিকের পরিবারের বিরুদ্ধে।

গতকাল বুধবার টাঙ্গাইল শহরের শিমুলতলি এলাকায় এমন মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনায় আহত খুশি বেগম হাসাপাতালে চিকিৎসা নিতেও আতঙ্কিত। বাড়ির বাইরে বের হওয়াটাও এখন নিরাপত্ত্বাহীনতা মনে করছেন ওই নারী। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল মডেল থানায় একটি অভিযোগও দিয়েছেন তিনি।

খুশি বেগমের অভিযোগ, বেশ কয়েকমাস ধরে তিনিসহ আরও তিন মহিলা শহরের শিমুলতলী এলাকায় মান্নান উকিলের বাসায় ভাড়া উঠেন। গত তিন মাস আগে তার সাথে থাকা অপর দিন মহিলা কিছু না বলে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। পরে একা বাসা ভাড়া দিতে কষ্ট হওয়ায় খুশি বেগম বাসা ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গত মাসে বাসা ছেড়ে দেওয়ার সময় তার কাছে বাসা ভাড়া দাবি করেন বাসার মালিক মান্নান উকিলের ছেলে রনি। তিন হাজার টাকা ভাড়ার মধ্যে দুই হাজার টাকা পরিশোধ করেন খুশি। বাকি এক হাজার টাকার পরিবর্তে খুশি বেগমের টিভি রেখে দেন রনি। টাকা দিয়ে টিভি নেওয়ার কথা জানায় খুশিকে।

পরে গতকাল বুধবার খুশি বেগম ওই বাসার সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ভাড়ার অবশিষ্ট টাকা দাবি করেন রনি। টাকা দিতে না পারায় রনি ও তার ভাই রুবেল, বোন চাদনী, রনির স্ত্রী শিউলীসহ পরিবারের সদস্যরা খুশি বেগমকে চুল ধরে টেনে ছেছড়ে তাদের বাসায় নিয়ে যায়। কক্ষের দরজা বন্ধ করে খুশি বেগমকে বেধরক পেটায় তারা। এসময় খুশি বেগমের কাছে থাকা দুই হাজার টাকা ও দুটি কানের দুল খুলে নেন রনির পরিবারের সদস্যরা। মারধরের ফলে খুশি বেগমের চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়েছে। পরে তিনি কাঁদতে কাঁদতে থানায় অভিযোগ করতে গেলে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার সনদ আনতে পাঠায় থানা কৃর্তপক্ষ। হাসপাতাল থেকে খুশি বেগম সনদ আনার সময় তার হাতে থাকা সনদ ছিনিয়ে নেয় রনিসহ ৭/৮ জন লোক। তারপরও কৌশলে হাসপাতালের নার্সের সহযোগিতায় কিছু ঔষধ লিখে নিয়ে চলে আসেন তিনি।

এই ঘটনায় অভিযুক্ত রনির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খুশির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। তিনি এসব অভিনয় করছে। আমি তাকে ডেকে ভাড়ার কথা জিজ্ঞেস করেছি মাত্র।

এই ব্যাপারে টাঙ্গাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মোশারফ হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগরে চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায় নি।

এই ব্যাপারে বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থার টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ বলেন, বিষয়টি আইন বহির্ভুত। আইন নিজ হাতে তুলে নেওয়া ঠিক হয়নি। ভাড়ার টাকার জন্য একজন নারীকে মারধর করা কোনভাবেই উচিৎ হয়নি।