১৮ বছর পর অস্ত্র মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন শতবর্ষী রাবেয়া

আলোকিতপ্রজন্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১৯ পিএম, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০১৯ | ২৯৯

১৮ বছর আগে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা  মামলা থেকে অশীতিপর রাবেয়া খাতুনকে অব্যাহতি দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আদালত বলেছেন, ‘এই মামলায় রাবেয়া খাতুনকে আর আদালতে আসতে হবে না। একইসঙ্গে এই মামলা সংশ্লিষ্ট ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. আল মামুন ও এপিপিকে সতর্ক করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।’ সবাই মিলে বিচার বিভাগকে রক্ষা করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন আদালত।

এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বুধবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন মৃধা। রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আশরাফুল আলম নোবেল।

গত ২৬ জুন উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত থাকার পরও রাবেয়া খাতুনের মামলার কার্যক্রম চালানোয় বিচারক মো. আল মামুনকে তলব করেন হাইকোর্ট। পরে তিনি আদালতে হাজির হয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।

গত ৩০ এপ্রিল এক আদেশে রাবেয়া খাতুনের মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। মামলার নথি তলব করেন। এ ছাড়া বিচার বিলম্বের ব্যাখ্যা দুই সপ্তাহের মধ্যে জানতে চান আদালত।

পরবর্তীতে গত ১৫ মে পরবর্তী আদেশে ২৬ জুন রাবেয়ার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে তার আইনজীবীকে নির্দেশ দেন। এ ছাড়া এপিপিকে হাজির হতে বলেন।  আজ আদালতে রাবেয়া ও এপিপি সাহাব উদ্দিন মিয়া হাজির হন। ‘অশীতিপর রাবেয়া : আদালতের বারান্দায় আর কত ঘুরবেন তিনি’ শীর্ষক শিরোনামে গত ২৫ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। আইনজীবী মো.আশরাফুল আলম এ রিট আবেদন করেন। 

ওই প্রতিবেদনে রাবেয়া খাতুনের বরাত দিয়ে বলা হয়, '১৮ বছর ধরে আদালতে হাজিরা দেই। মামলা শেষ হয় না। কবে শেষ হবে, তাও জানি না। পুলিশরে শরবত, মোরাব্বা বানাই খাওয়াছি। তারপরেও মামলায় আমারে আসামি বানাইছে। আমি আর বাঁচতে চাই না। মরতে চাই। অনেকদিন ধরে এই মামলায় হাজিরা দেই। আদালত আমাকে মামলা থেকে খালাসও দেয় না, শাস্তিও দেয় না।'

অবৈধ অস্ত্র ও গুলি নিজ হেফাজতে রাখার অপরাধে রাবেয়া খাতুনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ২০০২ সালের ২ জুন তেজগাঁও থানার এসআই আবদুর রাজ্জাক বাদী রাবেয়া খাতুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা নম্বর ১৯৩৮/০২। এরপর রাবেয়া খাতুন গ্রেপ্তার হন। ছয় মাস কারাগারে থেকে জামিন পান তিনি। ২০০৩ সালের ২৪ মার্চ রাবেয়া খাতুনসহ দুই আসামি জুলহাস ও মাসুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।