ব্যাংক ঘেড়াও

টাঙ্গাইলে এনসিসি ব্যাংকে চেক জালিয়াতি করে গ্রাহকের কোটি টাকা আত্মসাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ০৫:৩১ পিএম, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ৬২৯

টাঙ্গাইলে এনসিসি ব্যাংকের কালিহাতী উপজেলার রামপুর শাখার ব্যাংক কর্মকর্তার যোগসাজসে মার্কেটিং অফিসারের বিরুদ্ধে একাধিক গ্রাহকের এফডিআর একাউন্ট থেকে জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

এঘটনায় আজ সোমবার দিনভর এনসিসি ব্যাংকের গ্রাহকরা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংক ঘেরাও করেছে।

প্রতারণার স্বীকার কুয়েত প্রবাসী সাদ্দাম হোসেন জানান, প্রায় ২ বছর পূর্বে উপজেলা রামপুর এনসিসি ব্যাংক শাখায় দুটি একাউন্টের মাধ্যমে ৩০ লাখ ও ৫ লাখ টাকা ব্যাংকে এফডিআর এর মাধ্যমে জমা রাখা হয়। রোববার সকালে জমাকৃত টাকা উত্তোলন করতে গেলে একাউন্টে ব্যালেন্স শূণ্য দেখায়। পরে বিষয়টি নিয়ে ব্যাংকে হৈ চৈ পড়ে গেলে এবং সাদ্দাম হোসেন জমাকৃত অর্থের উপযুক্ত প্রমাণাদি পেশ করলে ব্যাংক ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ তাকে ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে রাখার কথা বলেন এবং অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন।

তিনি আরও বলেন, এনসিসি ব্যাংকের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদের যোগসাজসে ব্যাংকের মার্কেটিং অফিসার মনিরুল ইসলাম ইউসুফ এর মাধ্যমে তার গচ্ছিত এফডিআর এর একাউন্ট থেকে ৩৫ লাখ টাকা জাল স্বাক্ষর করে আত্মসাৎ করেছে।

ঘটনাটি ব্যাংকের চার দেয়াল পেরিয়ে বাইরে আসলে একাধিক গ্রাহকের মনে সন্দেহ দেখা দেয়। তারা ব্যাংকে জমাকৃত ডিপিএস/এফডিআর এর টাকা একাউন্টে জমা আছে কি না দেখার জন্য ভিড় জমায়। পরে স্থানীয় আরও ৭/৮ জন গ্রাহক তাদের ব্যাংক এ্যাকাউন্টের টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পান। যার সম্মিলিত পরিমান প্রায় কোটি টাকা।
এই বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা রামপুর এনসিসি ব্যাংক ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদের সাথে কথা বললে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ব্যাংকের মার্কেটিং অফিসার মনিরুল ইসলাম ইউসুফ ব্যাংক থেকে সাদ্দামের স্বাক্ষর জাল করে দুইটি চেক বই নেয়। ওই চেক বই দিয়ে তিনি এনসিসি’র ব্যাংক থেকে জাল স্বাক্ষর করে টাকা উত্তোলন করেছে। ব্যাংক থেকে সাদ্দাম হোসেনের এফডিআর এর টাকা ফেরত দেয়া হবে।

তিনি জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান চান মাহমুদ পাকির ও এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিদের সাথে আলোচনা করে সাদ্দামকে আগামী ৩১ নভেম্বর টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।

এবিষয়ে মার্কেটিং অফিসার মনিরুল ইসলাম ইউসুফ সাদ্দাম হোসেনের এফডিআর একাউন্ট থেকে জাল স্বাক্ষকের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের কথা স্বীকার করেন।
এই ঘটনায় ঢাকা থেকে ব্যাংক কৃর্তপক্ষের উদ্ধতন কর্মকর্তারা ব্যাংকে এসে প্রতারিতদের সাথে আলোচনা করেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান চান মাহমুদ পাকির বলেন, এনসিসি ব্যাংক ম্যানেজারের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। দু মাসের মধ্যে গ্রাহক সাদ্দাম হোসেনের এফডিআর এর টাকা ফেরত দেয়া হবে বলে ব্যাংক ম্যানেজার জানিয়েছেন। এসময় তিনি সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন। এদিকে ব্যাংক ম্যানেজারের অর্থ জালিয়াতির খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই ব্যাংক থেকে তাদের একাউন্ট ক্লোজ করে অন্য ব্যাংকে একাউন্ট করে টাকা রাখার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বলে গ্রাহকরা জানান।