আ’লীগ বিএনপিতে দু’জন করে প্রার্থী

লালপুরে এখন সমর্থকরা নেতা, নেতারা সমর্থক

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩:৪১ পিএম, মঙ্গলবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৪৫৩

নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে বড় দুটি দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপি উভয় দলে রয়েছে একাধিক গ্রুপ। এ নিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই তৃনম‚ল নেতা-কর্মীদের। গ্রুপিং থাকায় দু'দলের সমর্থকদের মধ্যে আগে থেকেই রয়েছে চরম আভ্যন্তরীন কোন্দল। সেই সাথে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন এ আসনের দু'দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের কাছে এখন যেনো " গোদের উপর বিষ ফোঁড়া "।

আসন্ন নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে নাটোর জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বকুল ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা কর্নেল (অবঃ) রমজান আলী সরকারকে।

ফলে একই আসনে দু'জন নৌকার মাঝি। এখনো চুড়ান্ত হয় নি কে হবেন নৌকার একমাত্র কান্ডারী। সেই সাথে বর্তমান সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদকে এবার দলীয় মনোনয়ন না দেয়ায় দলের একটি বৃহৎ অংশ এখনো মন বেজার করে রয়েছেন। কাজেই এ আসনের নৌকার সমর্থকরা এখন রয়েছেন ত্রিমুখী সংকটে। দলের পদ ধারী নেতারা রয়েছেন চরম অস্বত্তিতে, কার পেছনে যাবেন নৌকার প্রচারনায়। একজনের পেছনে গেলে আরেক জনের সমর্থকদের চোখের বালি।

এ পরিস্থিতিতে জাগ্রত হয়েছে দলের সুবিধাভোগী একটি গ্রুপ। তারা প্রার্থীদের পেছনে অবস্থান নিয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের ব্যাপারে বিভিন্ন কটুক্তি ও তৃনম‚ল আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের উপর শারীরিক ও মানুষিক নির‌্যাতন চালাচ্ছেন।পাশাপাশি উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির নেতৃবৃন্দদের সাথে নতুন প্রার্থীদের সমর্থকদের চলছে নেতৃত্ব নিয়ে প্রতিযোগিতা। ফলে ভোটের যুদ্ধ বাদে এখন চলছে অস্তিত্ব রক্ষার যুদ্ধ।

এছাড়া বিএনপি থেকেও এ আসনের সাবেক সাংসদ ফজলুর রহমান পটলের স্ত্রী কামরুন্নাহার শিরিন ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে দু'দলের সমর্থকদের মধ্যেও চলছে প্রতিযোগিতা।
ফলে রাজনৈতিক অভিভাবক হিসাবে মসনদে কাকে বসাবেন তা নিয়ে দু'দলের তৃনম‚ল নেতাকর্মীরা রয়েছেন সিদ্ধান্তহীনতায়।
অপরদিকে জাতীয় পার্টি সমর্থিত লাঙ্গল মার্কার প্রার্থী সাবেক সাংসদ আবু তালহা ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি দলের মনোনীত প্রার্থী ইব্রাহিম খলিল মহাজোটের প্রার্থী হবার জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এছাড়া ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন নেয়ার চেষ্টায় আছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মনোনীত প্রার্থী নাটোর জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও গোপালপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মনজুরুল ইসলাম বিমল।

তবে নেতাদের পাশাপাশি প্রার্থীরাও রয়েছেন চরম বেকায়দায়। দলীয় নেতাকর্মীদের মান-অভিমান আর দাবি-দাওয়া প‚রণে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
প্রার্থীরা জানান, একক প্রার্থী চুড়ান্ত হলে এ সমস্যা তারা কাটিয়ে উঠবেন ও সবাইকে সাথে নিয়ে নির্বাচনী বৈতরনী পার হবেন।

বিএনপি ও আওয়ামীলীগের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কয়েকজন নেতার দাবী, যখন একজন করে প্রার্থী চুড়ান্ত হবে তখন আর কোন বিভেদ থাকবে না, প্রতিটি নেতাকর্মী প্রার্থীর পাশে থাকবেন। তবে প্রার্থীদের সঙ্গে যারা বর্তমানে সঙ্গ দিচ্ছেন তাদের সাথে অপর পক্ষের সমর্থকদের নেতৃত্ব নিয়ে কিছুটা দ্বন্দ্বের সম্ভাবনা হওয়াটাই স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছেন তারা।
তবে সবচেয়ে শঙ্কার বিষয় হিসেবে তারা জানিয়েছেন নতুন নেতৃত্বের ক্ষেত্রে, নতুন যারা নেতৃত্বে আসছে তাদের অধিকাংশই সিনিয়র নেতাদের ম‚ল্যায়ন করছে না, এমনকি আধিপত্য বিস্তারের জন্য নিজ দলের নেতাকর্মীদের উপর নানা ধরনের অত্যাচার চালাচ্ছে।এ ধারা অব্যাহত থাকলে দলের ক্ষতির পাশাপাশি প্রার্থীকে জয়লাভ করানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।