মির্জাপুরে

সরকারি জমিতে সিএনজি স্টেশন স্থাপন; রাজস্ব বঞ্চিত সরকার

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১২:০৫ পিএম, সোমবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৮ | ৪০৭

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সরকারি জমিতে দীর্ঘ একযুগ ধরে সিএনজি ফিলিং স্টেশন স্থাপন করে ব্যবসা চালিয়ে আসার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি জমি দখল করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সিএনজি স্টেশনের অনুমোদন নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা মূল্যের প্রায় এক একর সম্পত্তি বেহাত হওয়ার পাশাপাশি রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচেছ সরকার।

মির্জাপুর উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের মো. ইব্রাহিম মিয়া প্রতারনার মাধ্যমে সরকারি জমিতে মা সিএনজি ফিলিং স্টেশনের অনুমোদন নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানী মৌজায় এসএ ৪২৪নং দাগে ৩.১০ একর অর্পিত সম্পত্তি রয়েছে। ১৯৯৫-৯৬ সালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস সড়ক নির্মাণকালে ওই দাগে ১.৫৪একর ভূমি অধিগ্রহণ করে সরকার। ২০০৭ সালে মহাসড়কের বাইপাস সড়ক যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হলে ইব্রাহিম মিয়া ওই দাগে মহাসড়কের দক্ষিনা পাশে থাকা অবশিষ্ট জমির উপর মা সিএনজি ফিলিং স্টেশন স্থাপন করেন।

সূত্র জানায়, সরকারের খাস অথবা অর্পিত সম্পত্তিতে সিএনজি ফিলিং স্টেশন স্থাপন করতে হলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে ওই জমি লিজ অথবা বন্দোবন্ত পাওয়ার পরই অনুমোদন মেলে। কিন্ত সরকারের ১/১ খতিয়ানভুক্ত অর্পিত ওই সম্পত্তি লিজ বা বন্দোবন্ত ছাড়াই ইব্রাহিম মিয়া ২০০৭ সালে তথ্য গোপন করে সিএনজি স্টেশনের অনুমোদন নেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের কোটি কোটি টাকা মূল্যের ওই জমির উপর সিএনজি ফিলিং স্টেশন স্থাপন করতে সুচতুর ইব্রাহিম মিয়া অন্য দাগের জমির কাগজ ওই দাগের দেখিয়ে প্রতারনার মাধ্যমে পাম্পের অনুমোদন হাতিয়ে নেন।

সেই থেকে দীর্ঘ এক যুগ ধরে সরকারের জমি দখল করে সিএনজি পাম্প স্থাপনের পর এখন মূল্যবান ওই জমি তিনি বেহাতের পাইতারা চালিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে সরকারি ওই জমির উপর থাকা সিএনজি পাম্প দেখিয়ে ইব্রাহিম মিয়া ন্যাশনাল ব্যাংক কালিয়াকৈর শাখা ও ব্র্যাক ব্যাংক টাঙ্গাইল শাখা থেকে কয়েক কোটি টাকা ঋণও গ্রহণ করেছেন বলেও জানা গেছে।

অপরদিকে তথ্য গোপন করে প্রতারনা মাধ্যমে সরকারি জমিতে সিএনজি স্টেশন স্থাপন করে বছরের পর বছর ব্যবসা চালিয়ে আসলেও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

প্রতারনার মাধ্যমে সরকারি জমির উপর স্থাপিত সিএনজি স্টেশন উচ্ছেদ ও সরকারি অনুমোদন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।

এ ব্যাপারে মা সিএনজি স্টেশনের মালিক মো. ইব্রাহিম মিয়ার সঙ্গে কথা হলে ৪২৪ দাগের ওই জমি সরকারের নয় নিজের দাবি করেন। তবে দখলকৃত জমির কাগজ দেখতে চাইলে বৈধ কোন কাগজপত্র দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।

এব্যাপারে তিতাস গ্যাস ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি প্রধান কার্যালয়ের উপ মহাব্যবস্থাপক বরুন কুমার বলেন লিজ বা বন্দোবস্ত পাওয়া ছাড়া সরকারি জমিতে কোন প্রতিষ্ঠান স্থাপনের কোন সুযোগ নেই।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল মালেক বলেন মালিকানা ছাড়া সরকারি জমিতে কোন প্রতিষ্ঠান স্থাপনের সুযোগ নেই। সরকারি জমিতে কেউ যদি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে তবে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।