ঐতিহ্যবাহী বেনাপোল পাটবাড়ি আশ্রমে

শ্রী শ্রী ব্রহ্ম হরিদাস ঠাকুরের নির্যান তিথি মহোৎসব শুরু

বেনাপোল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০১:০৪ পিএম, সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ৯৩৪

ঐতিহ্যবাহী বেনাপোল পাটবাড়ি আশ্রমে শ্রী শ্রী ব্রহ্ম হরিদাস ঠাকুরের নির্যান তিথি মহোৎসব আজ রোববার থেকে শুরু হয়েছে নানা আয়োজনে। মংগল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, মংগলাচরন,গুরুবন্দনা বঞ্চব বন্দনা, পঞ্চতত্ত বন্দনাসহ অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন, শ্রী মাদব দাস বাবাজী সেবাইত।

দুই দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠান শেষ হবে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর। দেশ-বিদেশ’র হাজার হাজার ভক্তের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠেছে নির্যান তিথি মহোৎসব। রাত আড়াইটায় আকর্ষনীয় লীলা কীর্তন পরিবেশন করবেন ভারতের পশ্চিমবংগের সুরসাগর সুজিত বসু।

শ্রী শ্রী ব্রহ্ম হরিদাস ঠাকুরের ভক্তিগীতি, ভাগবত , জীবনী আলোচনা, কীর্তন, নির্বাণলীলা আস্বাদন, ও পদাবলী কীর্তন নিয়ে চলছে নির্বাণ তিথি মহোৎসব। ভারত সহ অন্যান্য দেশের ভক্তরাও যোগ দেন এই অনুষ্ঠানে। উৎসবে ২০ টি স্টলে রয়েছে ধর্মীয় নানা উপকরন।

সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার কেড়াগাছি গ্রামে ভক্তরূপে জন্ম নেন হরিদাস ঠাকুর। হরিদাস ঠাকুর ছিলেন প্রকৃত বৈষ্ণবের জ্বলন্ত নিদর্শন এবং দৈন্যের অবতার।

ভক্তদের মতে, জাতিভেদ, কুসংস্কার, অনাচারের মধ্যে যখন হিন্দু জাতি ডুবে ছিল, সে সময় জাতিকে মুক্ত করতে জন্ম নেন গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু।

হরিদাস ঠাকুরের ‘সাধনকানন’ নামে খ্যাত বেনাপোল পাটবাড়ি। কথিত আছে, হরিদাস ঠাকুর প্রতিদিন তিন লাখ বার হরিনাম জপ করতেন। চিরপতিত সুন্দরী লক্ষ্ণীহীরা হরিনাম মহামন্ত্রে হরিদাস ঠাকুরের কৃপালাভে পরম বৈষ্ণবী হয়ে যান।

হরিদাস ঠাকুরের পাটবাড়ি আশ্রমটিতে রয়েছে প্রায় ৬০০ বছরের মাধবীলতা আর সুপ্রাচীন তমালবৃক্ষ। আর এই তমালবৃক্ষের ছায়াতলে ব্রহ্ম হরিদাস ঠাকুরের পাটবাড়ি আশ্রম। পাটবাড়ি আশ্রমে রয়েছে হরিদাস ঠাকুরের জীবনীর ওপর একটি মিউজিয়াম সেন্টার, সুপ্রাচীন তমালবৃক্ষ, মাধবীলতা, সিদ্ধবৃক্ষ; যা থেকে পাওয়া যায় চৈত্র মাসে পাকা কাঁঠাল। ১২-১৪ ফুট মাটির নিচে সুড়ঙ্গে সিঁড়ি বেয়ে গীরিগোবর্ধন মন্দির।

নির্যাণ তিথি উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব সুকুমার দেবনাথ জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম তীর্থস্থান পাটবাড়ি আশ্রম। দেশ বিদেশের ভক্ত,সাধু সন্ন্যাসীদের আগমনে মুখরিত হয়ে মহোৎসব পাটবাড়ি আশ্রম।অন্য বছরের চেয়ে এবার ভক্তের সংখ্যা বাড়বে বলে ধারণা সুকুমারের।

পাটবাড়ি আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক শ্রীফণীভূষণ পাল জানান, ঐতিহ্যবাহী এ পাটবাড়ি আশ্রমটি আজ দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সকল অনুষ্ঠান এখানে স্বাধীনভাবে পালন করা হয়। দেশ-বিদেশ থেকে যে সমস্ত ভক্ত বা দর্শনার্থী আসেন তাদের এখানে থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা করা হয় আশ্রমের পক্ষ থেকে। তাদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থাও করা হয়ে থাকে বলে তিনি জানান।