কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন নেতা রিমান্ডে


কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাড়িতে ভাঙচুর ও শাহবাগে নাশকতার মামলায় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের তিন যুগ্ম আহ্বায়ককে দুইদিন করে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ এই আদেশ দেন।
ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার আনিসুর রহমান জানান, গত ৪ জুলাই ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে উপাচার্যের বাড়িতে ভাঙচুর ও শাহবাগে নাশকতার দুই মামলায় তিন আসামিকে হাজির করে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। সে দিন মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতের বিচারক আজ রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে আসামিদের কারাগারে পাঠান।
আনিসুর জানান, সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। আসামিদের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া রিমান্ডের আবেদন বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। সে আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ আসামিদের জামিনের আবেদন খারিজ করে প্রত্যেককে দুইদিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ডে নেওয়া আসামিরা হলেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেন, মশিউর রহমান ও জসিম উদ্দিন আকাশ।
ফারুকসহ অন্য আসামিদের গত ৩ জুলাই রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করার দাবি করে পুলিশ।
নথি থেকে জানা যায়, গত ৮ এপ্রিল কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শাহবাগে পুলিশকে মারধর, কর্তব্য কাজে বাধা, পুলিশের ওয়াকিটকি ছিনতাই ও উপাচার্যের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার অভিযোগে শাহবাগ থানায় চারটি মামলা করা হয়।
এর মধ্যে উপাচার্যের বাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধার দুই মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন- রাকিবুল হাসান, আলী হোসেন শেখ, মাসুদ আলম, আবু সাঈদ ফজলে রাব্বি ও মশিউর রহমান।
অন্যদিকে গত ৮ জুলাই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের মামলা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুরের মামলায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খানকে ১০ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। তিনি এখন রিমান্ডে রয়েছেন।
গত ১ জুলাই শাহবাগ থানায় আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খানের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয়। ওই দিনই রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বর সেকশনের ভাষানটেক বাজারের মজুমদার মোড়ের ১২ নম্বর বাসা থেকে রাশেদ খাঁনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার নথিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন, যা প্রজ্ঞাপন প্রকাশের প্রক্রিয়াধীন। এরপরও গত ২৭ জুন রাশেদ খাঁন ‘কোটা সংস্কার চাই’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ থেকে ভিডিও লাইভে এসে বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে মানহানিকর বক্তব্য ও মিথ্যা তথ্য দেন।