ক্যানসারে আক্রান্ত উদ্যমী হৃদয় বাচার স্বপ্ন দেখছে

শামসুল ইসলাম সহিদ, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩:৫০ পিএম, বুধবার, ২৫ এপ্রিল ২০১৮ | ৫৩৬

মেধাবী উদ্যমী ছেলে জাহিদুল ইসলাম হৃদয় এখন মরণ ব্যধি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে অচিরেই জীবন প্রদীপ নিভে যাওয়ার আশংকায় দিন গুনছে। সে ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে হাসিখুশি আর আনন্দ উল্লাসে মেতে থাকা মা-বাবার একমাত্র ছেলে হৃদয় এখন অনেকটায় দুর্বল হয়ে পড়েছে।

টগবগে এই তরুণ করটিয়া সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বোটানি বিভাগে অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র। বাড়ি মির্জাপুর পৌরসভার বাইপাস এলাকা পুষ্টকামুরী পূর্বপাড়া। পিতা শাহিন সিকদার পেশায় একজন মোবাইল ফোন দোকানদার। মির্জাপুর বাজারের বংশাই রোডে তার মোবাইল ফোন ও ফ্লেক্সিলোডের দোকান। ছেলে হৃদয় ছাড়াও সামিয়া নুসরাত কথা নামে শাহিন সিকদারের আট বছরের মেয়ে রয়েছে।

উদ্যমী হৃদয় বাবা-মা ও বন্ধুদের সহায়তায় যখন জীবনের রঙিন স্বপ্ন বাস্তবায়নের খুব কাছাকাছি। সোনালী স্বপ্ন যখন তাকে হাতছানি দেয় ঠিক সেই মুহূর্তে তার শরীরে ধরা পড়ে মরণ ব্যধি ক্যানসার। অভাব না থাকলেও অল্প আয়ের শাহিন সিকদারের ছোট্ট সংসারে সুখ-শান্তির কমতি ছিল না। কিন্তু চিকিৎসকের এমন রিপোর্টে পরিবারের সব স্বপ্ন যেন নিমিশেই ভেঙ্গে গেল।

মেধাবী এ শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন। সকলের সহায়তায় ছেলে সুস্থ হয়ে উঠবে এ আশায় হাসপাতালে নির্ঘুম রাত্রিযাপন করেছেন হৃদয়ের বাবা-মা। মরণ ব্যাধিতে আক্রন্ত ছেলে, তবু যেন বুকভরা স্বপ্ন বাসা বাধে মা বাবার মনে।

হৃদয়ের পিতা শাহিন সিকদার জানান, গত কয়েক মাস আগে হঠাৎ করেই হৃদয়ের ডায়রিয়া ও বমি হয়। প্রথমে স্থানীয় ক্লিনিক ও পরে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও ভাল হচ্ছিল না। পরীক্ষা করে চিকিৎসক জানান, হৃদয়ের ক্যানসার হয়েছে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, তার ব্রোনমেরুতে রক্ত সঞ্চালন হচ্ছে না। উন্নত চিকিৎসা করাতে হবে। প্রয়োজনে অপারেশন করাতে হবে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ছেলের চিকিৎসার জন্য জমি বিক্রি করে দেশে চিকিৎসা করিয়েছি। এখন ক্যানসার প্রতিরোধে আরো ১৫ লাখ টাকার প্রয়োজন বলে শাহিন সিকদার জানান।

এদিকে হৃদয়ের কয়েকজন বন্ধু তাকে হারাতে চায়না বিধায় তারা উদ্যোগ নিয়েছে তারা চিকিৎসায় ব্যয় মেটাতে সকলের কাছে সহায়তা চাবে। সে লক্ষ্যে তারা তহবিল সংগ্রহে নেমেছেন।

এ বিষয়ে তারা মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত সাদমীনের কাছে পরামর্শ ও সহায়তা চেয়েছেন। ইউএনও ইসরাত সাদমীন ক্যানসারে আক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হৃদয়ের চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহে ‘জাহিদুল ইসলাম হৃদয়’ নামে চিকিৎসা সহায়তা কমিটি’ গঠন এবং ‘হৃদয় চিকিৎসা সহায়তা তহবিল’ নামে একটি ব্যাংক হিসাব খোলার পরামর্শ দিয়েছেন।

হৃদয়ের পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি তার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বন্ধুরা জাহিদুল ইসলাম হৃদয়ের জীবন বাঁচাতে দেশ বিদেশে অবস্থানকারী হৃদয়বানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

জাহিদুল ইসলাম হৃদয়কে সহায়তা করতে চাইলে তার পিতার মোবাইল ফোন দোকানের বিকাশ নম্বরে (০১৭৭৭০৯২৪৪৪) সহায়তা করার জন্য আহবান জানান।