কিছু যুদ্ধ বিমান মোতায়েন করেছে বেজিং
জম্মু-কাশ্মীরের মাটিতে জঙ্গি হামলা চালাতে জয়েশকে মদত দিচ্ছে চীনও

২০ ফেব্রুয়ারি: ভূস্বর্গের রক্তপাতে বড় ইন্ধন রয়েছে চীনের। জঙ্গি সংগঠন জয়েশ-ই-মহম্মদকে ঢাল করেই নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে এই ছায়া যুদ্ধ চালাচ্ছে বেজিং। এক সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই অভিযোগ করলেন জম্মু-কাশ্মীরের পূর্তমন্ত্রী তথা মুখপাত্র নঈম আখতার। তিনি স্পষ্ট বলেন, কাশ্মীর ইস্যু এখন আর ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আরও একটি বৃহৎ শক্তি এর মধ্যে জড়িয়ে রয়েছে। পাকিস্তান মোটেও একা নয়, চীনও কাশ্মীরের গোলমালে উস্কানি দিচ্ছে। তিনি বলেন, উপত্যকায় সন্ত্রাস কায়েম রাখতে এখন জয়েশ-ই-মহম্মদ বড় ভূমিকা নিচ্ছে। আর এই জয়েশের পিছনে রয়েছে বেজিং। এই জঙ্গি সংগঠনকে এখন সরাসরি মদত দিচ্ছে তারা। চীনের মদতেই উপত্যকায় একের পর জঙ্গি আক্রমণ নামিয়ে আনছে মাসুদ আজহারের সংগঠন।
কেন তিনি এমন বলছেন? যুক্তি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, গত তিন বছরে রাজ্যে যত বড় জঙ্গি হানা হয়েছে তার সবকটিরই পিছনে রয়েছে মাসুদ আজহারের দল। শোনা যায় জামাত-উদ-দাওয়া প্রধান হাফিজ সইদের বিরুদ্ধে কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা কেউ শুনেছে? এমনকী, সালাউদ্দিনের মতো কম ওজনদার জঙ্গি নেতাকেও রাষ্ট্রসঙ্ঘের আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদীর তালিকায় রাখা গিয়েছে। কিন্তু মাসুদ আজহারের নাম ঢোকাতে গেলেই প্রাচীর হয়ে দাঁড়াচ্ছে চীন। বিনা কারণে এমনটা কখনই হতে পারে না। শুধু তার ক্ষেত্রেই এমন কেন হবে? অন্যদের বেলাতে তো চীন রাষ্ট্রসঙ্ঘে এমন আপত্তি তোলে না। এটা থেকেই বোঝা যায় মাসুদ আজহার আর তার সংগঠনের সঙ্গে চীনের যোগ রয়েছে। উল্লেখ্য, মাসুদ আজহারকে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সন্ত্রাসবাদী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ভারতের উদ্যোগকে সমর্থন করেছিল আমেরিকা, ফ্রান্স ও ব্রিটেন। কিন্তু চীন বারবার ভেটো দিয়ে সেই উদ্যোগে জল ঢেলে দেয়।
কাশ্মীর অশান্ত রাখার যে চক্রান্ত চীন করছে তা রোখার দাওয়াইও দিয়েছেন পিডিপি নেতা। বলেছেন, এর জন্য কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা চালানো দরকার। কারণ না হলেই পাকিস্তানকে গিলে নেবে চীন। বস্তুত, চীনই যে জয়েশের মাধ্যমে এই আলোচনার পরিবেশ ভেস্তে দিতে চাইছে, তা বুঝিয়েছেন পূর্তমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। তারপর প্রধানমন্ত্রীও হঠাৎ করে পাকিস্তানে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। তখন পরিস্থিতি বেশ ভালো ছিল। দু’দেশের বন্ধুত্বের সম্পর্ক জোরালো হচ্ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী লাহোর থেকেই ফিরতেই ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে পাঠানকোট হামলার ঘটনা হল। কারা করল? জয়েশ। পুরো পরিবেশটাই এরপর বিষিয়ে উঠল। কাশ্মীর ইস্যুতে চীনের ভূমিকা ধরতে না পারলে পাকিস্তান বা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসার যৌক্তিকতা বোঝা যাবে না।
একদিকে জঙ্গিদের মদত দিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধ চালাচ্ছে চীন, অন্যদিকে সীমান্তের পশ্চিমপারে নিজেদের বিমানবহর বাড়াচ্ছে তারা। গ্লোবাল টাইমসে এমন অত্যাধুনিক বিমান মোতায়েনের ছবি ছাপানো হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ভারতের হামলা রুখতেই এই পাল্টা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বলে চীন জানিয়েছে। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি মালদ্বীপে সঙ্কটের সময় ১১টি চীনা যুদ্ধজাহাজ ঢুকে এসেছিল ভারতের পূর্ব উপকূল পর্যন্ত। এই দাবি করল চীনেরই একটি নিউজ পোর্টাল।