‘ভাঙনরোধে জিওব্যাগ ফেলার কার্যক্রম চলমান’
যমুনায় আবারও পানি বৃদ্ধি


উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গত কয়েকদিন ধরে গুড়ি গুড়ি টানা বৃষ্টির প্রভাবে তৃতীয় দফায় টাঙ্গাইলের যমুনা, ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদীসহ জেলার সবগুলো নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেতে শুরু করছে। তবে এ দফায় বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড।
অপরদিকে, ফের পানি বৃদ্ধির ফলে আবারও বন্যার আশঙ্কা করছেন যমুনা চরাঞ্চলের মানুষ।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে, সোমবার সকাল ৬ টা থেকে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) সকাল ৬ টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ী পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৭২, ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১২৩ এবং ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসীন পয়েন্টে ২৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৮৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) সকাল ১১ টায় পানি বৃদ্ধির এ বিষয়টি নিশ্চিত করে টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাত হোসেন জানান, গত কয়েক দিন ধরে নতুন করে জেলার যমুনা নদীসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে, বন্যার আশঙ্কা নেই এবং ভাঙনরোধে জিওব্যাগ ফেলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চরপৌলি গ্রামের সবুজ সরকার জানান, নদী ভাঙনে ১৬ বিঘা সম্পতি নদী গর্বে বিলিন হয়ে গেছে। এবারের বন্যায় তিন শতাধিক ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গেছে।
ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের ভালকুটিয়া গ্রামের ফজল মন্ডল বলেন, আমাদের গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৪ শতাধিক বসতভিটা ভেঙে গেছে এবারের বন্যায়। মাসখানেক নদীর পানি কমে নদী শুকিয়ে যায় চর জেগে ওঠে। গত ২-৩ দিন ধরে আবারও পানি বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। তাই ফের বন্যার আশঙ্কা করছি এবং নদী ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদী পাড়ের মানুষ। পোড়াবাড়ি এলাকার নজরুল ইসলাম, কালিহাতী উপজেলার যোগারচর গ্রামের মহিউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি জানান, ধলেশ^রী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
অপরদিকে নদী ভাঙ্গন এলাকাগুলোতে জিওব্যাগ ফেলা অব্যাহত রয়েছে। এদিকে, টানা কয়েক সপ্তাহ যমুনার পানি আশঙ্কাজনক হারে কমলেও জেলার সদর উপজেলার কাকুয়া, চর পৌলি, পোড়াবাড়ি , বেগুনঢাল, কালি কেউডিল, হুগড়া, কালিহাতী উপজেলার, যোগার চর ,আলীপুর, বেলুটিয়া,ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী, অর্জুনা, গাবসারা ও নিকরাইলে ভাঙন অব্যাহত থাকে।
ভাঙনের ফলে এবার বন্যায় ইতিমধ্যে এসব এলাকায় ১৫’শ বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফের পানি বৃদ্ধি হওয়ায় আবারও তীব্র হারে ভাঙনের আশঙ্কা করছেন নদী তীরবর্তী এলাকার নদী ভাঙন কবলিত মানুষ।