হারিয়ে যেতে চলেছে ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ী

মোসফিকুর রহমান নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৫:৫৬ পিএম, শুক্রবার, ২ নভেম্বর ২০১৮ | ৫৭৪
এক সময়ের জনপ্রিয় যাতায়াতের মাধ্যম দুই চাকাবিশিষ্ট গরুর গাড়ি এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। কালের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যেতে বসেছে যাতায়াতের এ মাধ্যমটি । কিন্তু শখের বসে হলেও এই গরুর গাড়ি এখনও স্বযত্নে রেখেছেন সেই সময়ের গাড়িয়াল নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী পাগলাটারী গ্রামের মনছুর আলী।
 
সম্প্রতি বাহাগিলি ইউনিয়নের পাগলাটারী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মনছুর আলী আগাম আলু লাগানোর জন্য গোবর সার বস্তায় ভরে জমিতে নিয়ে যাচ্ছেন গরুর গাড়িতে করে।
এসময় তাঁর কাছে গরুর গাড়ি সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশি দিনের কথা নয় ২৫ থেকে ৩০ বছর পূর্বে মালামাল পরিবহনের একমাত্র মাধ্যম ছিল গরুর গাড়ি। কিশোরগঞ্জের ব্যবসায়ীদের জন্য সৈয়দপুর থেকে গরুর গাড়িতে করে মালামাল নিয়ে আসতাম। কিন্তু বর্তমানে যান্ত্রিক যুগে আর গরুর গাড়ি ব্যবহৃত হয় না। কিন্তু আমি আমার সাংসরিক কাজের জন্য এখনো গরুর গাড়ি স্বযন্তে রেখেছি।
 
তিনি বলেন, দিন যতই যাচ্ছে মানুষের চাহিদা ততই বাড়ছে। আধুনিকতার নামে মানুষের ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যাচ্ছে। আগে ছইওয়ালা গরুর গাড়িতে করে পর্দানশীন নারীরা যাতায়াত করতো। এখন আর সেই দৃশ্য চোখে পড়ে না।
 
উপজেলার চাঁদখানা নগরবন গ্রামের তফেল উদ্দিন (৮০) বলেন, গরুর গাড়ির যখন প্রচলন ছিল তখন মাল আনা নেয়ার কাজে একসঙ্গে ১০ থেকে ১৫টি গরুর গাড়ি নিয়ে যেতাম। বিয়ের বাড়িতে গেলে তখন তো মজাই হত আলাদা।
 
উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের দুরাপুটি গ্রামের শাহজাহান সিরাজ বলেন, কিশোরগঞ্জের গ্রামে গ্রামে ২০০০ সালেও গরুর গাড়ির প্রচলন ছিল। আমরা আমাদের চাচা-মামাদের বিয়েতে যেতাম গরুর গাড়িতে চড়ে। পর্দায় ঢাকা ছইওয়ালা গরুর গাড়িতে করে নতুন বউকে নিয়ে ফিরতাম আমরা। কতো মজা করতাম গরুর গাড়িতে চড়ে।