সখীপুরে নার্সের ভুলে নব জাতকের মৃত্যু দুই নার্সকে শোকজ

সখীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৬:১৮ পিএম, রোববার, ৭ জানুয়ারী ২০১৮ | ৪৭১

টাঙ্গাইলের সখীপুরে দুই নার্সের ভুলে কামরুন্নাহার বেগম কামনা (৩০) নামের এক গর্ভবতীর নবজাতক সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের দুই নার্স মুক্তি ও জরিনা আক্তারকে শোকজ করা হয়েছে।

পরে ওই গর্ভবতীর স্বামী রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে সখীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। কামরুন্নাহার বেগম কামনা উপজেলার বোয়ালী গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার কামরুন্নাহার বেগম কামনা সন্তান প্রসব হওয়ার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। সকাল ৯ টার দিকে হাসপাতালে ডাক্তার আসার আগেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুই নার্স মুক্তি আক্তার ও জরিনা আক্তার জোরপূর্বক অপরেশন থিয়েটারে নিয়ে ওই গর্ভবতী মহিলার জরায়ূর মুখে হাত ঢুকিয়ে বুকের উপর চাপ প্রয়োগ করে বাচ্চা বের করার চেষ্টা করেন।

খবর পেয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শাহীনুর ইসলাম ওই মহিলার অবস্থার অবনতি দেখে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ট করেন। পরে ওই গর্ভবতীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে স্থানীয় লাইফ কেয়ার ক্লিনিকে জরুরি ভিত্তিতে সিজারিয়ানের মাধ্যমে মাথা থেতলানো মৃত বাচ্চা বের করা হয়।

প্রসূতী কামরুন্নাহার বেগম কামনা বলেন, সরকারি হাসপাতালের দুই নার্স মুক্তি ও জরিনা প্রায় দুই ঘন্টা ধস্তাধস্তি করে আমার সন্তানকে মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ওই দুই নার্সের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কলটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
আবাসিক মেডিকেলে অফিসার মো. শাহীনুর ইসলাম বলেন, ওই গৃহবধূর নরমাল ডেলিভারি সম্ভব নয় বলেই তাকে আমি টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে রেফার্ট করি।

তবে আমার অনুপস্থিতে নার্সেরা কি করেছে তা আমি জানি না।

স্থানীয় লাইফ কেয়ার ক্লিনিকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ডিআই রেজাউল করিম বলেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই গর্ভবতীকে ভর্তি করে সিজারিয়ানের মাধ্যমে অর্ধ গলানো মাথা নিয়ে একটি ছেলে সন্তান জন্মের কিছুক্ষণ পরেই মারা যায়। তিনি আরো বলেন, বাচ্ছার সাইজ বড় থাকায় নরমাল ডেলিভারীর চেষ্টার কারণে বাচ্চাটির মাথায় প্রচন্ড আঘাত লাগে।

ওই গৃহবধুর স্বামী মো রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার স্ত্রীর উপর নার্সরা অমানবিক নির্যাতন করেছে। যে কারনে আমার বাচ্চার মৃত্যু হয়েছে। তিনি এর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন।

সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রাফিউল করিম খাঁন বলেন, এ ঘটনায় শনিবার অভিযুক্ত দুই নার্স মুক্তি ও জরিনাকে শো’কজ করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে এর জবাব চাওয়া হয়েছে।

সখীপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকছুদুল আলম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।