সরকারি নির্দেশ অমান্য

পাঠদানের অনুমতি নেই, ৫ হাজার টাকা দিলেই পরীক্ষার ব্যাবস্থা

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৬:৩৯ পিএম, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০১৯ | ১৬৬৬

পাঠদানের অনুমতি না থাকলেও ৭৬ জন শিক্ষার্থীকে পড়াচ্ছেন এবং অন্য বিদ্যালয়ের মাধ্যমে এসএসসি পরীক্ষাও দিবে তারা। দ্বিগুণেরও বেশি টাকা নিয়ে তাদের জন্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে তরফপুর আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এভাবেই নানা অজুহাতে চলছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বোর্ড নির্ধারিত ফির চেয়ে বেশি টাকা আদায়। সব মিলিয়ে বোর্ড ফি বিজ্ঞান বিভাগে এক হাজার ৯৭০, বাণিজ্য ও মানবিক বিভাগে এক হাজার ৮৫০ টাকা। অতিরিক্ত টাকা দিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য পরীক্ষা ফি, কেন্দ্র ফি, সনদপত্র, স্কাউট ও জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহসহ সব মিলিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে এক হাজার ৯৭০, বাণিজ্য ও মানবিক বিভাগে এক হাজার ৮৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু মির্জাপুরের অধিকাংশ বিদ্যালয়ে ৩ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ফি আদায় করা হচ্ছে। অতিরিক্ত ফি আদায়ের ব্যাপারে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয় উন্নয়ন, মডেল ক্লাস, যাতায়াত ও অনলাইন চার্জসহ নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন।

উপজেলার তরফপুর আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরণের জন্য ৫ হাজার টাকা করে নিচ্ছেন। গেড়ামারা গোহাইলবাড়ি সবুজ সেনা উচ্চ বিদ্যালয় ৩৫০০ থেকে ৪০০০ হাজার, হাট ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয় ৪০০০ হাজার, সদরের পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ৩৫০০, গোড়াই উচ্চ বিদ্যালয় ৩৫০০, কুরনী জালাল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ৩০০০ থেকে ৩৫০০, তরফপুর বহুমখী দারুল সুন্নাহ দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থীরা ৩ হাজার ২শ টাকা দিয়ে ফরম পুরণ করেছেন।

একইভাবে মৈশামূড়া বসন্ত কুমাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, ভাতগ্রাম কে আর এস ইনস্টিটিউশন, সদরের আফাজ উদ্দিন দাখিল মাদরাসা, বরাটি নরদানা বাংলাদেশ উচ্চ বিদ্যালয়, জামুর্কী উচ্চ বিদ্যালয়সহ প্রায় বিদ্যালয়ে ফরম পুরণের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগে জানা গেছে।

তরফপুর আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থী জামান মিয়া জানায়, সে ৫ হাজার টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করেছে। একই কথা জানায়, বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থী শিপন, সেলিম, রাফি ইসলাম।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খালেকুজ্জামান মিয়া বলেন, ফরম পুরণের জন্য বিদ্যালয় ২৫০০ টাকা নিয়েছেন। বাকি টাকা বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্তে নেওয়া হয়েছে। ওই টাকা বিদ্যালয়ের উন্নয়নে খরচ করা হবে বলে জানান।

মির্জাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সুলতান উদ্দিন অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

গেড়ামাড়া গোহাইলবাড়ি সবুজ সেনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হোসেন অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

মির্জাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ বলেন, বোর্ড নির্ধারিত টাকা ছাড়া অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। ইতিমধ্যে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারের নির্দেশনা চিঠি পাঠানো হয়েছে। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছে, তাদের প্রত্যেককে ওই টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান।