টাঙ্গাইল-ভূঞাপুর সড়ক

ব্রীজ নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৪:২৫ পিএম, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ৪০৮

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর-এলেঙ্গা সড়কে চলছে ব্রীজ নির্মাণ ও রাস্তা উন্নয়নের কাজ। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কয়েকটি ব্রীজ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদারের দূর্নীতি ও সড়ক বিভাগের যোগসাজশে এ ধরনের কাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা । তবে ঠিকাদারের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

এলেঙ্গা-ভূঞাপুর সড়ক দিয়ে কালিহাতী, ঘাটাইল ও ভূঞাপুর উপজেলার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাফেরা করেন। তারাকান্দি সার কারখানার মালবাহী যান চলাচলের প্রধান সড়ক এটি। উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন এবং বঙ্গবন্ধু সেনানিবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের তাঁতিহারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ব্রীজের কাজ চলছে ঢিলেঢালাভাবে। ব্রীজের এপ্রোচ নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে ভাঙ্গা ব্রীজেরই নষ্ট ইট। এরকম দৃশ্য আরো কয়েকটি ব্রীজের। লুৎফর রহমান মতিন মহিলা মহাবিদ্যালয় সংলগ্ন কালভার্টটি চলাচলের জন্য ছেড়ে হয়েছে অসম্পূর্ণভাবেই। কালভার্টের উত্তর ও দক্ষিণ এপ্রোচ সড়কের মাটি না থাকায় যানবাহন চলাচলের অসুবিধার শেষ নেই।

এদিকে প্রতিটি ভাঙ্গা ব্রীজের পাশে যাতায়াতের জন্য বানানো হয়েছে বিকল্প সড়ক। বিকল্প সড়কগুলো সিডিউল অনুযায়ী তৈরি করা হয়নি। ভাঙ্গা ব্রীজের আবর্জনা দিয়েই তৈরি করা হয়েছে অধিকাংশ বিকল্প সড়ক। ডাইভারসনে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এলাকাবাসী রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদও করেছিলো।

সড়কের শ্যামপুর, ফুলতলা, নারান্দিয়া, কাগমারীপাড়া ও শিয়ালকোল বিকল্প সড়ক একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে। বিকল্প সড়কের মাথায় নেই মাটি, একটু পরপরই গর্ত। আবার সড়কের উপরেই রাখা হয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। রোদ থাকলে বিকল্প সড়ক ধুলায় অন্ধকার হয়। ছিটানো হয়না নিয়মিত পানি। আর বৃষ্টিতে গর্তে জমে পানি। ফলে ছোট বড় যানবাহনগুলো চরম ঝুঁকি নিয়েই ডাইভারশন পারাপার হচ্ছে। ঝাঁকুনি আর ধুলায় পথচারী ও যাতায়াতকারীদের ভোগান্তির শেষ নেই। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলা, বয়ষ্ক ও অসুস্থদের।

ভূঞাপুর-টাঙ্গাইল সড়কে যাতায়াতরত যাত্রীরা জানান, এই সড়কে বিকল্প সড়কগুলো খুবই নিম্নমানের, যাতায়াতই করা যায় না। তাঁতিহারা ব্রীজে নষ্ট ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলো দিয়ে কাজ করলে অল্প সময়ের মধ্যেই আবার চলাচলের অযোগ্য হয়ে যাবে। একই অভিযোগ করেছেন এলাকার অনেকেই। এলাকাবাসী সিডিউল অনুযায়ী কাজ করার দাবী জানিয়েছেন।

তাঁতিহারা ব্রীজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নবারুল ট্রেডার্স লিমিটেডের প্রকৌশলী তারেক হোসেন বলেন, ব্রীজের উপর সাময়িকভাবে যান চলাচলের জন্য এই সামগ্রীগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কথা তিনি অস্বীকার করেছেন।

টাঙ্গাইলের সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে জানা যায়, টাঙ্গাইল ভূঞাপুর সড়কের এলেঙ্গা থেকে চরগাবসারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার রাস্তা ২৪ ফিট চওড়াকরণ ও উন্নয়নের জন্য ৪৭ কোটি টাকার কাজ করছে ২টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আর ১০ টি ব্রীজ ও ১ টি কালভার্ট নির্মাণের জন্য বরাদ্দ ৫৩ কোটি টাকা। ৩ টি প্যাকেজে একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে এই কাজ করছে। ১০০ কোটি টাকার এই প্রকল্প শুরু হয়েছে ২০১৮ সালের ১লা নভেম্বর। আর শেষ হবে ২০২০ সালে ২০শে জুন।

এই প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী সোহেল মাহমুদ বলেন, এই ইটগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে সাময়িক চলাচলের জন্যে। তিনি নিম্নমানের ডাইভারসন নির্মাণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।