নাটোরের বিলমাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানে শিক্ষকের অবহেলা


নাটোরের লালপুর উপজেলার বিলমাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানে শিক্ষকদের অবহেলা সহ বিভিন্ন বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিদ্যালয়ের এমন অনিয়মের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুলবানীন দ্যুতি অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সতত্যা পেলে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপগ্রহনকরাহবে।
স্থানীয়দের লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার বিলমাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৩২৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছে, বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন ৯ জন। বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটনা থাকলেও পাঠদানের সংকট চলছে নিয়মিত। অভিযোগে বলা হয় শিক্ষকদের অবহেলায় মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যারয়ের প্রধান শিক্ষক ঝর্ণা ইয়াসমিন দীর্ঘদিন এই প্রতিষ্ঠানে রয়েছেন। তিনি স্থানীয় হওয়ায় নিজের পছন্দের লোকজনকে নিয়ে ম্যানিজিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। ফলে ইচ্ছেমতো স্কুল পরিচালনা করলেও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেন না।
শিক্ষকরা ক্লাসরুমে যতটুক সময় থাকেন তার চেয়ে বেশী সময় অফিসে বসে গল্প করা, মোবাইল নিয়ে ব্যস্ততাও শিক্ষকাদের ছোট সন্তান সামলাতেই বেশী ব্যস্ত থাকেন।আর সেই সুযোগে শিক্ষার্থীরা ক্লাসেহৈ-চৈ করতে থাকে। জাতীয় পতাকা উত্তোলনও জাতীয় দিবস গুলো পালনেও চরম অবহেলা করার সহ নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটির মিটিং না করে বাড়িতে রেজুলেশন খাতা পাঠিয়ে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ করা হয়।
ডবলমাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মিনু খাতুন বলেন, আমি ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য কিন্তু গত তিন বছরে আমি দুটি মিটিং করেছি। তারা মিটিং এনা ডেকে পিওন দিয়ে খাতা পাঠিয়ে স্বাক্ষর করতে বলেন।
অপর ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক অনেকটা দুঃখ করেই বলেন, আল্লাহ মানুষকে ভালোবাসলে কিছু অর্থ সম্পদশালী মানুষ তাদেরকে ঘৃনা করেন। আমি গত তিন বছর হলো ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছি অথচ কোন দিনই আমাকে ওই প্রতিষ্ঠানে মিটিং এ আহ্বান করা হইনি। যে সকল অভিযোগ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে করা হয়েছে তার যথেষ্ট সত্যতা রয়েছে।
স্থানীয় অভিভাবক শফিকুল ইসলাম বলেন, বেশী সংখ্যক শিক্ষক তাদের নিজ সন্তানদের স্কুলে নিয়ে আসেন এবং তাদের লালন-পালনে ব্যস্ত থাকেন। সঠিক ভাবে পাঠদান করাবেন কিভাবে। প্রতিষ্ঠানে এতগুলো শিক্ষক থাকলেও ঠিক ভাবে ক্লাস নেয়া হয় না। এছাড়া ও প্রধান শিক্ষকের ভাই-ভাবীসহ নিকট আত্মীয়দের নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি তৈরী করে রেখেছেন। তাই প্রতিষ্ঠানটিতে যথেষ্ট নজরদারীর অভাব রয়েছে।
বিদ্যালয় এলাকার অযোগ্য প্রধান শিক্ষককে বদলি করে দক্ষ একজন প্রধানি শক্ষক দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম দূর করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
তবে এ সকল অভিযোগ অস্বিকার করে বিলমাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ঝর্ণা ইয়াসমিন দাবি করেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। সমস্যার কারণে শুধুমাত্র গত ২১শে ফেব্রুয়ারীতে শহীদ মিনারে যাইনি। তাছাড়া সকল জাতীয় দিবস সঠিক ভাবে করা হয়।