জনগণের জন্য ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

আলোকিত প্রজন্ম
প্রকাশিত: ০৬:৩৪ পিএম, বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর ২০১৭ | ১৬৬

অবশেষে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হলো মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখার পর ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করেন তিনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই ফ্লাইওভার যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখবে। সময় বাঁচাবে। কর্মচাঞ্চল্য বাড়বে।

বিভিন্ন ফ্লাইওভার ও সড়ক যোগাযোগ উন্নয়ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। এতে কিন্তু জ্যামও বাড়ছে। এ কারণেই জনগণের জন্য ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে। মগবাজার মৌচাক ফ্লাইওভার যানজট নিরসনে অনেক বড় ভূমিকা রাখবে। মানুষ দ্রুত কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারবে। কর্মচঞ্চলতা বাড়বে। এই ফ্লাইওভার নির্মাণের সময় আমি খেয়াল রেখেছি, কয়েকবার ডিজাইন চেঞ্জ করেছি। যাই ব্যবহার করবেন যত্ন করে করবেন, ট্রাফিক আইন মানবেন। এগুলো জনগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য।’

ফ্লাইওভার উদ্বোধনের আগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির জনক স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তিনি দেশ পরিচালনার জন্য মাত্র সাড়ে তিন বছর পেয়েছেন। এরপর ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যায়। সারা বাংলাদেশে আমরা যে উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করেছিলাম তা বন্ধ করে দেওয়া হয় ২০০১ সালে। দেশকে অরাজকতার দিকে নিয়ে যায়। সাতটা বছর দেশের উন্নয়ন একবারে থেমে গিয়েছিল। ফের আমরা ক্ষমতায় এসে উন্নয়ন কাজ শুরু করি। এখন মানুষের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা এসেছে। আর্থিক স্বচ্ছলতা বাড়ছে বলে গাড়ির সংখ্যাও বাড়ছে। এটা অর্থনৈতিক উন্নয়নেরও সূচক।’

ফ্লাইওভারটি তিন ভাগে করা হয়েছে। একটি অংশ সাতরাস্তা-মগবাজার-হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল। এটা নির্মাণ করেছে নাভানা কনস্ট্রাকশন। গত বছরের মার্চে এই অংশ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর নিউ ইস্কাটন থেকে মৌচাক পর্যন্ত ফ্লাইওভারটির এক দিক খুলে দেওয়া হয়। এই অংশ নির্মাণ করেছে তমা কনস্ট্রাকশন। তৃতীয় ধাপে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) মোড় থেকে কারওয়ান বাজার অংশ যানবাহন চলাচলে খুলে দেওয়া হয় ১৭ মে। এই অংশও তৈরি করেছে নাভানা কনস্ট্রাকশন। এখন খুলে দেওয়া হলো ফ্লাইওভারটির মৌচাক-মালিবাগ-শান্তিনগর-রাজারবাগ-মগবাজার অংশ। এটা নির্মাণ করেছে তমা কনস্ট্রাকশন।

চার লেনের এই ফ্লাইওভার ছয়টি মোড় অতিক্রম করেছে। এগুলো হলো সাতরাস্তা, বিএফডিসি, মগবাজার, মৌচাক, শান্তিনগর ও মালিবাগ মোড়। এর মধ্যে মগবাজার, মালিবাগ ও কারওয়ান বাজারে রেললাইন অতিক্রম করেছে এই ফ্লাইওভার প্রকল্প।

২০১২ সালের ১৮ নভেম্বর শুরু হওয়া ফ্লাইওভারটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৪ সালের নভেম্বরে। তবে নকশায় ত্রুটি, সঠিক নকশা পেতে দেরি, ড্রয়িং-ডিজাইনসহ বিভিন্ন জটিলতায় বেশ কয়েকবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ তিন তলাবিশিষ্ট চার লেনের এই ফ্লাইওভারটি ১০ মাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল। এর প্রতিটি পিলার ১৫০ মিটার গভীর পর্যন্ত করা হয়েছে। এর নিচে বিভিন্ন জায়গায় আটটি বড় মোড় ও তিনটি রেলক্রসিং রয়েছে। ১২১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে।