ঠাকুরগাওয়ে রোগ নির্ণয় টিম

একই পরিবারে ৫ জনের মৃত্যু

হাসেম আলী, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৯:৪৮ পিএম, বুধবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ | ৩৭৭

অজ্ঞাত রোগে ১৫ দিনের ব্যবধানে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের ভান্ডারদহ নয়াবাড়ীর মৃত আবু তাহেরের বাড়ি পরিদর্শন করেছে ঢাকা থেকে আসা রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ৫ সদস্যের একটি তদন্তদল।

তদন্তদলের প্রধান ছিলেন আইইডিসিআর’র এফইটিপিবি ফেলো ডা. মোহাম্মদ গাজী শাহ আলম।

অন্য সদস্যরা হলেন মেডিকেল অফিসার ও সুপারভাইজার ডা. তানজিনা নওরীন, ডা. দেবাশীষ কুমার শাহ, ডা. শাহনাজ পারভীন ও ডা. ইসমাইল খান।

বুধবার দুপুর দেড়টায় তারা আক্রান্ত বাড়িতে তদন্ত দল পৌঁছানোর পর ওই পরিবারের অন্যান্য সদস্য, এলাকাবাসী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলেন এবং আবু তাহেরের বাড়ির ৪টি কক্ষ থেকে পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন।

নমুনা সংগ্রহ শেষে ৭২ ঘণ্টা পর রোগ ও মৃত্যরহস্য জানা যাবে বলে জানিয়েছেন মেডিকেল বিশেষজ্ঞ দল।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ঠাকুরগাঁও ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন শাহজাহান নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ৫ সদস্য তদন্ত দলের সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করেছেন।

রাজশাহী থেকে আরেকটি মেডিকেল টিম এ ঘটনায় ঠাকুরগাঁওয়ে আসছেন। দুটো মেডিকেল টিমই ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ দিন অবস্থান করবে। সংগৃহিত নমুনা ঢাকায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। ঢাকা থেকে পরীক্ষা-নীরিক্ষা শেষে প্রতিবেদন আসলেই ৫ জনের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে আশা করছেন তিনি।

এদিকে এলাকাবাসী বলছে, ঘটনাটি কোনো ভাইরাসজনিত কারণ নয়। আবু তাহের পেশায় কবিরাজ ছিলেন। দেব-দেবতার পূজা করতেন। পূজায় সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার কারণে প্রথমে তার মৃত্যু এবং পরে ধীরে ধীরে তার পরিবারের লোকজন মারা গেছেন বলে এলাকার লোকজন কুসংস্কার ছড়াচ্ছেন। তবে এসব কথা মেডিকেল দলকে জানালে বিষয়টি গুরুত্ব দেননি তারা।

উল্লেখ যে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাত একটি রোগে ভান্ডারদহ নয়াবাড়ী   গ্রামের ফজর আলীর ছেলে আবু তাহের (৫৫) মারা যান। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি একদিনের ব্যবধানে মারা যান আবু তাহেরের জামাতা হাবিবুর রহমান বাবলু (৩৫) ও স্ত্রী হোসনে আরা (৪৫)। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি আবু তাহেরের দুই ছেলে ইউসুফ আলী (৩০) ও মেহেদী হাসান মৃত্যুবরণ ও ওই পরিবারের ৩/৪ জন অসুস্থ হলে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।

এ সময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আক্রান্ত এলাকার ১ কিলোমিটারে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারিসহ মুখে মাস্ক পড়ে চলাফেরা এবং স্থানীয় দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়। তবে এলাকায় এখন আতঙ্ক কমতে শুরু করেছে।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুটি আগামীকাল বৃহস্পতিবার খুলে দেয়া হবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানা গেছে।