'২০০১ সালে বিএনপি জোটের আমলে রক্তের বন্যা বয়েছিল'

কক্সবাজার জেলা সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:৩০ এএম, সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ২৪৮
আওয়ামীলীগ নেতারা একজন আরেক জনের বিরুদ্ধে বিষোধগার করবেন না, বিএনপি-জামায়াত আবার ক্ষমতায় আসতে পারলে ২০০১ সালের মতো ভয়াবহ নির্যাতন নেমে আসবে। ২০০১ সালে বিএনপি জোটের আমলে রক্তের বন্যা বয়েছিল। আওয়ামীলীগের কোন নেতাকর্মীদের ঘরে থাকতে দেয়নি। গরু-ছাগল পর্যন্ত লুট হয়েছে। এমনকি ৫ বছরে ১০টি ঈদের নামাজ পড়তে পারেনি। মারা যাওয়ার মা-বাবার জানাজাও পড়তে পারেনি। জানাজা পড়তে এসে গ্রেফতার হতে হয়েছিল। বিএনপি-জামায়াত আবার ক্ষমতায় আসতে পারলে ২০০১ সালের মতো ভয়াবহ নির্যাতন নেমে আসবে।
 
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্ধী নয়, আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্ধী আওয়ামী লীগ। তাই আওয়ামীলীগ নেতারা একজন আরেক জনের বিরুদ্ধে বিষোধগার করবেন না।
 
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার শহীদ আব্দুল হামিদ পৌর বাসটার্মিনালে ২৩ সেপ্টেম্বর (রবিবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
 
তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন,‘বিএনপি এখন নালিশ পার্টিতে পরিণত হয়েছে। ফখরুল সাহেবরা ঝিমিয়ে গেছে। বিএনপি নেতারা কোনো অনুষ্ঠানে গেলে ঝিমায়, সংবাদ সম্মেলনে গেলে ঝিমায়।
 
চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ জাফর আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক আইনমন্ত্রী সাবেক আইনমন্ত্রী এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ূয়া, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জমান সোহাগ।  
 
চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তাফা, সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান, উখিয়া টেকনাফের সাংসদ আবদুর রহমান বদি, মহেশখালী কুতুবদিয়ার সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপ, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, জেলা পরিষদের সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক লায়ন কমরউদ্দিন আহমদ, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক খালেদ মিথুন, জেলা আওয়ামীলীগের আমিনুর রশিদ দুলাল, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, মাতামুহুরী আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিন বাবুল চেয়ারম্যান, সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এসএম জাহাংগীর আলম, পেকুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম লিটু, সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ। 
    
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোনো প্রকার কোন্দলে জড়ালে তাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে না। জনপ্রিয়তা যার তাকেই আগামীতে মনোনয়ন দেবে আওয়ামী লীগ। আর যাকেই মনোনয়ন দেয়া হোক না কেন নেতাকর্মীরা তার পক্ষে এক সঙ্গে কাজ করবে।’ নমিনিশন দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রার্থীদের আমলনামা নেত্রী হাতে পৌছে গেছে। জনমত জরিপে যিনি এগিয়ে আছেন তিনি মনোনয়ন পাবেন।
 
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি জামায়াত আওয়ামী লীগের মতো এমন জনসভা করতে পারবে না। কারণ তাদের সে জনপ্রিয়তা নেই। তাই একাদশ নির্বাচনে চকরিয়া-পেকুয়ায় নৌকার বিজয় কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবেনা। যার প্রমাণ চট্টগ্রাম থেকে চকরিয়ার পথে পথে মানুষের ঢল। বিএনপি এখন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। বিএনপি নেতারা জনগণকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে।’ আমি বলবো, বি.চৌধুরী, ড. কামাল, মান্না, মঈনুল ও ফখরুলরা যুক্তফ্রন্ট নামে ২০/৩০দল করে চেষ্টা করে দেখুন ঢাকায় চকরিয়ার মতো একটি সমাবেশ করে পারেন কিনা। আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি চকরিয়ার চার ভাগের এক ভাগ লোকও ঢাকাতে হবেনা।
 
নারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মহিলাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে শেখ হাসিনা। এই সম্মান কি আগে পেয়েছেন? বাচ্চার জন্মের পর রেজিস্ট্রেশনে মায়ের পরিচয় ছিলোনা। শেখ হাসিনা বল্লেন মা ১০ মাস কষ্ট করে সন্তান জন্ম দেয়। এ মায়ের নাম বাচ্চার পরিচয়ে থাকবেনা এটা হবে না। এ স্বীকৃতির মাধ্যমে সম্মান করেছে বঙ্গবন্ধুর কন্যা। আমি আশা করবো আপানারাও সে সম্মানের মর্যাদা আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে দিবেন।
 
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের কর্ণফুলি নদীর তিরে বিএনপির দূর্গে যে মানুষের উপস্থিতি হয়েছে। চকরিয়াতেও বিএনপির দূর্গ ভেঙ্গে গেছে। সাংবাদিকদের সমালোচনা করে বলেন, ইলেক্ট্রনিকস মিডিয়া ঠিক থাকলেও কিছু কিছু প্রিন্ট মিডিয়া যে ভাবে জাতীয় ঐক্যের গঠন নিয়ে সংবাদ ছাপিয়েছে। অথচ ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মহাসড়কে হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছে। সেসব সংবাদ ছাপা হয়নি।
 
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের ১৬ কোটি মানুষের হাতে ১৪ কোটি মোবাইল। ৮ কোটি মানুষের হাতে ইন্টারনেট। কে দিয়েছে এসব? বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাই দিয়েছে।
 
আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল সাহেব চোখের পানি ফেলে বললেন, নেতাকর্মীদের নির্যাতনের কথা। কিন্তু আপনি ২০০১সালের আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতনের কথা স্মরণ করুন। আর আপনাদের সেই আন্দোলনও দেশে হবেনা। আগামী ঈদের আন্দোলন বলতে বলতে ১০বছরে ২০টি ঈদ চলে গেলো, কই কোনো আন্দোলনইতো হয়নি। ভবিষ্যতে সেই আশাও আর করতে হবে।