পঞ্চগড়ে অবৈধ ঋণ কার্যক্রমে সর্বশান্ত সাধারণ মানুষ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৬:৪৬ পিএম, বুধবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ২১২
পঞ্চগড়ে দীর্ঘ দিন যাবত সমবায় সমিতির নামে অবৈধ ঋণ কার্যক্রম (কিস্তি) দারিদ্র্য বিমোচনের কথা বলে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ সুদ গ্রহন করে সাধারন মানুষকে সর্বশান্ত করছে, যাতে নিয়মনীতির কোন বালাই নেই। এতে প্রান্তিক পরিবার গুলো আরো নিঃস্ব হচ্ছে। এ খাত থেকে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।
 
সদর উপজেলা সমবায় অফিস থেকে নামে বেনামে প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন নিয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে সমবায় সমিতি আর ঋণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে শহরের হাট বাজার থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলে এমনকি এক উপজেলা থেকে নিবন্ধন নিয়ে অন্য উপজেলায় গিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ ঋণ কার্যক্রম।
 
লোকজনের কাজ থেকে চড়া সুদে সুবিধা দিচ্ছে। কিছুদিন আগে বন্ধন ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, আমানত কারি ও কর্মীর জামানত প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে।কোন প্রকার আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করে নাই জেলা সমবায় কর্মকর্তা, সদর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মামুন কবিরের নজরে বিষয় টি আনলে তিনি জানান আমি জেলা সমবায় অফিস কে বিষয় টি নিয়ে রিপোর্ট করেছি।
 
অতীতের মহাজন জোতদারের মতোই সেডস সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি, পুষ্প মহিলা সমবায় সমিতি, গলেহা ঐক্য কল্যাণ  কৃষক সমবায় সমিতি, এই সমবায় প্রতিষ্ঠান গুলো ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বার্ষিক প্রতিবেদনে কারো ঋণ কার্যক্রম নেই। সেডস এর সদস্য সংখ্যা ৩৫ জন, পুষ্প সদস্য সংখ্যা ২০ জন, এদের প্রত্যেকের প্রকৃত সদস্য সংখ্যা ৩/৪ হাজার ছাড়িয়েছে।
 
এ সব সমবায় প্রতিষ্ঠান সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য দুরীকরনের কথা বলে বিভিন্ন ব্যাবসায়ী, কৃষক, গৃহবধুসহ তৃণমুল পর্যায়ে সঞ্চয় সংগ্রহ করে ক্ষুদ্রঋণ থেকে শুরু করে ব্যাবসায়িক ঋণ প্রথা চালু করে সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার আশায় সাধারণ মানুষ এসব নামধারী সমিতির প্রতারণায় আশক্ত হয়ে ঝুঁকছে।
 
দৈনিক, সাপ্তাহিক, বা পাক্ষিক কিস্তিতে ঋণ আদায় শুরু হলে গড় হিসাবে দেখা যায় সুদের হার ৩০-৪০ শতাংশ। প্রথম দিকে নগরীর বাজারের ব্যাবসায়ীদের ঘিরে এসব সমিতির কার্যক্রম চালু হয়।
 
জগদল, গোয়ালঝার, হেলিপোট, ব্যারিস্টার, গলেহা বাজার, গড়ের ডাঙ্গা, গেদের কুড়ি, মানিকপীর, বোদা, সহ পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে এসব সমিতির ঋণ কার্যক্রম চালু হওয়ার পর তাদের পরীধি গ্রামাঞ্চলে বেড়ে চলেছে। প্রত্যেক সমবায় সমিতির বার্ষিক রিপোর্টের সাথে সমবায় সমিতির প্রকৃত অবস্থার কোন মিল নেই। পরিদর্শকগন সমবায় সমিতি হতে সুবিধা নিয়ে মনগড়া বার্ষিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন।
 
এ ব্যাপারে পঞ্চগড় সদর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মামুন কবীর বলেন, সমিতির সদস্য ব্যতীত অন্য কোন মানুষের সাথে ঋণ কার্যক্রম করে থাকলে সমবায় এর আইনে তার সমিতির নিবন্ধন বাতিল সহ প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।