মা কই, আমি সিঙ্গারা খাবো

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১:২৯ এএম, রোববার, ২৯ জুলাই ২০১৮ | ৪৮৯

মা কই সিঙ্গারা খাবো, এই কথা বলে কান্না করছে আর মাকে খুজছে শিউলীর শিশু পুত্র তাওহীদ(২)। অবুজ শিশুকে শান্তনা দেওয়ার মত ভাষা কারো নেই। শুধু কথা গুলি শুনে চোখের জল ফেলছে পরিবারের লোকজন। দুস্কৃতিকারীদের কাছ থেকে সম্ভ্রম বাঁচাতে চলন্ত বাস থেকে পড়ে গার্মেন্টস কর্মী শিউলী বেগম (২৮) মৃত্যু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার সকালে।

সকাল সাড়ে ৭টায় একটি বাস যোগে শিউলী তার কর্মস্থল গোড়াই শিল্পাঞ্চলের কমফিট কম্পোজিট গার্মেন্টে যাচ্ছিলেন। বাসে উঠার প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাওয়ার কুমারজানী নামক স্থানে পৌছার পর যাত্রী বেশী কয়েকজন দুর্বৃত্ত শিউলী বেগমের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করলে বাসের জানালা দিয়ে মাথা বের করে চিৎকার করতে থাকেন তিনি। এক পর্যায়ে দুষ্কৃতিকারীদের কাছ থেকে বাঁচতে শিউলী বেগম চলন্ত বাস থেকে লাফ দিলে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যান।

ঘটনার পর শিউলীর বড় ছেলে সিফাত(১০) মায়ের জন্য কান্নায় ভেঙ্গে পড়লে পরিবারের লোকজন তাকে কোনভাবে সামলে নিতে পারলেও অবুজ শিশু পুত্র দুই বছর বয়সী তাওহীদকে সামলানোর ভাষা পরিবারের কারো নেই। কারন সে তার মায়ের আদর স্নেহজনিত কিছু মুহুর্তই বুজতে শিখেছে। শিউলী প্রতিদিন তার কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে তাওহীদের জন্য সিঙ্গারা নিয়ে আসতেন। মাকে দুদিন না পেয়ে সেই সিঙ্গাারার কথাই তার মনে পড়ছে। সন্ধে হলেই সেই যখন তার মনে নাড়া দিয়ে উঠে তখনই সে বলে উঠে মা কই, সিঙ্গারা খাবো। তার এই প্রশ্নের জবাব পরিবারের কেউ দিতে পারেনা, শুধু মুখ লুকিয়ে চোখের জল ফেলছেন।

মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ একে এম মিজানুল হক বলেন পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

শামসুল ইসলাম সহিদ / এমএমআর