বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক জিএম আব্দুল মালেক মিঞা আর নেই

এনায়েত করিম বিজয়, বাসাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১২:২০ পিএম, সোমবার, ৯ এপ্রিল ২০১৮ | ২৯১

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক জিএম, নবোদয় হাউজিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সম্মানিত সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল মালেক মিঞা ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন)।

রোববার (৮ এপ্রিল) দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে ঢাকার ল্যাব এইড স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬৭ বছর। তিনি ৩ পুত্রসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

তিনি গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাসাইল-সখীপুর আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দ্বিতীয়স্থানে ছিল। এবারও তিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আব্দুল মালেক মিয়া ১৯৫১ সালের ১৪ই আগষ্ট সখীপুর উপজেলার হাতীবান্দা গ্রামে এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মহগ্রহণ করেন। বাবা মরহুম তোফাজ্জল হোসেন মাতা মরহুমা জোবেদা খানম। বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর ঢংপাড়াতেও তার বাড়ি রয়েছে।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ (অনার্স), এম. এ (পরিসংখ্যান) করেন। তিনি ১৯৮৯ সালে ইংল্যান্ডের ওয়ার উইক, বিশ্ববিদ্যালয় হইতে অর্থনীতিতে পোষ্ট গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ, ১৯৭৪ সালে প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে প্রথম শ্রেণী কর্মকর্তা হিসেবে কেন্দ্রীয় বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকুরী জীবন শুরু করেন। দীর্ঘ ৩৪ বছর বিভিন্ন পদমর্যাদায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অর্থ, ব্যাংকিং, মুদ্রা নীতি সংক্রান্ত কর্মকান্ডে নিয়োজিত ছিলেন।

১৯৭৭ সালে “বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ও ওয়েলফেয়ার কাউন্সিলে সহ-স¤পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন, ১৯৮৫-৮৬ এবং ১৯৮৬, ১৯৮৭-১৯৮৮ সালে “বাংলাদেশ ব্যাংকস্থ” টাঙ্গাইল জেলা সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে গরীব মেধাবী ছাত্র/ছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান, দুরারোগ্য রোগীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা, ঘুর্নিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় সাহায্য বিতরণসহ সমাজহিতৌষী বিভিন্ন কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণ করেন।

১৯৯২ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে ৩টি মেয়াদের জন্য “বাংলাদেশ ব্যাংকস্থ বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার কর্মকর্তা/কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি হিসেবে সফলভাবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। টাঙ্গাইল জেলা সমিতির আজীবন সদস্য ও অন্যতম উপদেষ্টাও ছিলেন তিনি। ১৯৮৩ সালে মোহাম্মদপুর থানাধীন রামচন্দ্রপুর মৌজায় প্রায় ৫০ একর জমি নিয়ে একটি আবাসিক প্রকল্প “নবোদয় বহুমূখী সমবায় সমিতি লিমিটেড” নামের সমবায় সমিতির জন্মলগ্ন থেকে সেক্রেটারীর দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন তিনি।

তার ৩ ছেলেই বি.সি.এস ক্যাডারের সদস্য। বড় ছেলে বি.সি.এস (বানিজ্য), মেঝ ছেলে বি.সি.এস (ঊপড়হড়সরপ) এবং সর্ব কনিষ্ঠ ছেলে বি.সি.এস (অডিট এন্ড এ্যাকাউন্ট) ক্যাডারের সদস্য। ছোট ভাই প্রফেসর ডাঃ আব্দুস সামাদ। তিনি দেশের খ্যাতি সম্পন্ন ডাক্তারদের মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে ল্যাব এইড স্পেশালাইজড হাসপাতালে কিডনী বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত।

সোমবার (৮ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় সখীপুর পাইলট হাইস্কুল মাঠে দ্বিতীয় ও বাদ আসর তার গ্রামের বাড়ি হাতীবান্ধা তালিমঘর সংলগ্ন মাঠে চতুর্থ জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হবে।