কাল থেকেই স্বজনদের কাছে ফোন করার সুযোগ পাবেন কারাবন্দীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৩৭ পিএম, মঙ্গলবার, ২৭ মার্চ ২০১৮ | ৩২৬

টাঙ্গাইল জেলা কারাগার থেকে বন্দীরা তাদের স্বজনদের সঙ্গে এখন মুঠোফোনে কথা বলতে পারবেন। দেশে এই প্রথমবারের মতো বন্দীদের ফোনালাপের কার্যক্রম আগামীকাল বুধবার উদ্বোধন করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ‘স্বজনের সঙ্গে সংশোধনের পথে’ স্লোগান সামনে নিয়ে টেলিফোনে কথা বলা এই কার্যক্রমের নামকরণ করা হয়েছে ‘স্বজন পরিবারের বন্ধন’।

জেলা কারাগার সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশনের (এটুআই) সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ড ও বাংলাদেশ জেলের সহায়তায় এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এই কার্যক্রমের আওতায় বন্দীরা (হাজতি ও কয়েদি) কারাগারে আসার পর তাদের কাছ থেকে স্বজনদের দুটি মুঠোফোন নম্বর রাখা হবে। একজন বন্দী মাসে দুবার ১০ মিনিট করে কথা বলার সুযোগ পাবেন। কথা বলার ক্ষেত্রে নারী, বৃদ্ধ ও বন্দীদের সঙ্গে আসা শিশুদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার সরেজমিন টাঙ্গাইল কারাগারে গিয়ে দেখা যায়, কারাগারের ভেতর একটি কক্ষে চারটি ফোন বুথ তৈরি করা হয়েছে।

জেলার আবুল বাশার জানান, কোনো বন্দী সরাসরি বুথে গিয়ে কথা বলতে পারবেন না। নির্ধারিত সময়ে বন্দীরা বুথে ঢুকে এক বা দুই চাপলে সফটওয়্যার থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দিষ্ট নম্বরে সংযোগ পাওয়া যাবে। নির্ধারিত সময় ১০ মিনিট পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে কল কেটে যাবে। সময় শেষ হওয়ার তিন মিনিট আগে সতর্কসূচক ‘বিপ’ হবে। নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরে কল ডায়াল হবে না। শুধু নির্ধারিত সময়েই কল করতে হবে। বন্দীদের স্বজনেরা নির্ধারিত সময়ে যাতে কথা বলার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারেন, সে জন্য আগের দিন তাদের মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে সময় জানিয়ে দেওয়া হবে।

এটুআই প্রকল্পের পরামর্শক তানভীর কাদেরের নেতৃত্বে কারাগারে ফোন বুথ ও এর সফটওয়্যার প্রস্তুত করা হয়েছে। বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উদ্বোধনের পর একজন বন্দী তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার মধ্য দিয়েই এ কার্যক্রম শুরু হবে। তানভীর কাদের বলেন, কারাগারের যেসব কর্মী এই কার্যক্রমে যুক্ত থাকবেন, তাদের পরিচালনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

টাঙ্গাইলের জেলা সুপার মঞ্জুর হোসেন বলেন, বন্দীরা কারাগার থেকে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলতে পারলে তাদের পারিবারিক যোগাযোগ অক্ষুণ্ন থাকবে।

পুলিশ সুপার জানান, বন্দীদের মধ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনের সদস্য এবং অপহরণ ও চাঁদাবাজির মামলায় অভিযুক্ত বন্দীরা ফোনে কথা বলার সুযোগ পাবেন না। নিরাপত্তার স্বার্থে বন্দীদের প্রতিটি কল রেকর্ড করা হবে। এ ছাড়া বুথে সার্বক্ষণিক কারারক্ষী নিয়োজিত থাকবেন।