মা ও শিশু বিষয়ক

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সেমি ফাইনালে বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

তনয় কুমার বিশ্বাস
প্রকাশিত: ০৪:৪৯ পিএম, বুধবার, ১৪ মার্চ ২০১৮ | ৮৩৯

বাংলাদেশ টেলিভিশন কর্তৃক আয়োজিত মা ও শিশু বিষয়ক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সেমিনাইনাল পর্বে উঠেছে টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।

গত ৯ মার্চ শুক্রবার বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে অনুষ্ঠিত কোয়ার্টার ফাইনাল পর্বে ঢাকার শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়কে হারিয়ে সেমিফাইনাল পর্বে উঠেছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রতিযোগিতার বিষয় বস্তু আইনের প্রয়োগ নয়, কেবল সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমেই শিশু এবং নারী পাচার বন্ধ করা সম্ভব

বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিতার্কিক দলের সদস্যরা এই বিষয়ের বিপক্ষে বিতর্ক করেন। রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, ক্যামব্রিয়াম স্কুল এন্ড কলেজ, সিভিল এভিয়েশন স্কুল এন্ড কলেজ, হলিক্রস স্কুল এবং ভিখারুন্নেছা স্কুল এন্ড কলেজকে হারিয়ে সেমিফাইনাল পর্বে উঠেছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন এর সঠীক দিক নির্দেশনা এবং প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মো. আল মামুন তালুকদার এর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি লেখাপড়ায় ভাল ফলাফলের পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমেও এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের এ সাফল্যের নেপথ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছেন প্রতিষ্ঠানের বিতার্কিক দলের তিন সদস্য। আর তাদেরকে সঠীক দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন প্রতিষ্ঠানের দুই শিক্ষক প্রতিভা রাণী দাস এবং শাহনাজ বেগম।

বিতার্কিক দলের দল নেতা ১০ম শ্রেণির ছাত্রী মেহেরুন্নেছা অর্থী বলেন, “আমরা মা ও শিশু বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সেমিফাইনাল পর্বে উঠেছি। সেমিফাইনালে উঠতে আমাদের অনেক স্কুলকে হারাতে হয়েছে। আমাদের এত দূর আসার পিছনে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন আমাদের প্রধান শিক্ষক মো. আল মামুন তালুকদার স্যার। এছাড়া সকল শিক্ষকদেরও সহযোগিতা এবং অনুপ্রেরণা পেয়েছি।

বিতার্কিক দলের প্রথম বক্তা ১০ শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত ইসলাম হুমায়রা বলেন, “ আমরা বিটিভি আয়োজিত মা ও শিশু বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করেছি। এতে আমরা অনেক আনন্দিত। আমাদের প্রধান শিক্ষক, শিক্ষমন্ডলী এবং প্রতিষ্ঠানের সহকলেই অনেক সাহস যুগিয়েছেন।” বিতার্কিক দলের দ্বিতীয় বক্তা বলেন,“ আমি বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিতার্কিক দলের সদস্য হয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করতে পেরে নিজেকে খুবই সৌভাগ্যবান মনে করছি। আমাদেরকে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং আমাদের সহপাঠীরা সব সময় সাহস এবং উৎসাহ দিয়েছেন।

প্রতিষ্ঠানের দুই অভিভাবক মো. আলম হোসেন এবং খন্দকার নুরুল ইসলাম হূমায়ুন বলেন, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক এবং শিক্ষক মন্ডলী অত্যন্ত যত্নসহকারে আমাদেরও মেয়েদেরকে শিক্ষা প্রদান করছেন। এছাড়াও আমাদের মেয়েরা লেখা পড়ায় ভাল ফলাফলের পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমেও উন্নতি করছে।”

বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আল মামুন তালুকদার বলেন, প্রতিষ্ঠানের সভাপতি খান মো. নুরুল আমিন স্যারের সঠীক দিক নির্দেশনায় আমারা এগিয়ে যাচ্ছি। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সেমিফাইনাল পর্বে উঠায় আমি খুবই আনিন্দিত। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ছাত্রী এবং অভিভাবকদের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই আমারা এ পর্যন্ত আসতে সক্ষম হয়েছি। আশা করছি ২০১৬ সালের ন্যায় এবছরেও বিতর্ক প্রতিযোগিতায় টাঙ্গাইলবাসীর দোয়ায় আমাদের প্রতিষ্ঠানটি সারা বাংলাদেশ চ্যম্পিয়ন হবে।

বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন বলেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ছাত্রী এবং অভিভাবক সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ভাল ফলাফলের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি সার্বিক দিক থেকে উন্নতি করছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবছরেও বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সেমিফাইনাল পর্বে উঠেছে আমাদের প্রতিষ্ঠান।

এ জন্য বিতার্কিক দলের সদস্যসহ প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, সকল শিক্ষক, ছাত্রী এবং অভিভাবকদের ধন্যবাদ জানাই। আমি আশা করছি প্রতিষ্ঠানটি লেখাপড়ায় ভাল ফলাফলের পাশাপাশি আগামীতে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে পরিণত হবে।” মা ও শিশু বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগিতার কো-অর্ডিনেটর শৈলেন মন্ডল বলেন, “ বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিতার্কিক দলটি খুবই ভাল করছে।

প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, প্রশিক্ষক, এবং তাদের অভিভাবকরা যত্ন সহকারে দলটিকে প্রস্তুত করেছেন যার ফলশ্র“তিতে তাদের সেমিফাইনাল পর্বে উঠা। এছাড়াও ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটি সারা বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ই প্রথম ঢাকার বাইরের কোন চ্যাম্পিয়ন প্রতিষ্ঠান। এর আগে ঢাকার বাইরে কোন প্রতিষ্ঠানই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করতে পারে নি।”

উলে­খ্য, ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের উদ্যোগে এই প্রতিযোগিতাটি শুরু হয়ে অধ্যবদি চলছে। প্রতিবছর সমগ্র বাংলাদেশের প্রায় ৪০-৪৮ টি দল অংশগ্রহন করেন। এবছর এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে সেমিফাইনাল পর্ব শেষে ফাইনাল পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।