সাপাহারে নার্স ও চিকিৎসকের অবহেলার কারণে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

সাপাহার প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: ০৫:৩১ পিএম, রোববার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ | ২৭৮

নওগাঁর সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে ডাক্তার-নার্সের চিকিৎসায় অবহেলার কারনে নাছরিন আক্তার (২৮) নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মৃত্যুর স্বজন ও এলাকাবাসী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে চিকিৎসক ও নার্সের বিচারের দাবি জানান।

মৃত প্রসূতি নাছরিনের স্বজনদের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রামাশ্রম গ্রামের সাইফুল ইসলামের গর্ভবতী মেয়ে নাছরিন আক্তার শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিজ বাড়িতে ¬কন্যা সন্তান প্রসব করেন। এর পর প্রসূতির ফুল না পড়ায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রসূতিকে সাপাহার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসেন স্বজনেরা।

জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নাছরিন কে ভর্তি করার পরামর্শ দেয়। তাৎক্ষনিক পরিবারের লোকজন নাছরিন কে ভর্তি করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা ওয়ার্ডে নিয়ে যায়। মহিলা ওয়ার্ডের কর্তব্যরত নার্সগণ প্রসূতির স্বজনের কাছ থেকে ইঞ্জেকশন করার জন্য দেড় হাজার টাকা দাবী করে।

টাকা না দিলে নার্সগণ ইঞ্জেকশন করবেনা বলেও জানিয়ে দেয়। অপরদিকে প্রসূতির স্বজনদের দাবী, শনিবার সকাল পর্যন্ত প্রসূতি সুস্থ্য ও স্বাভাবিক ছিল। কর্তব্যরত নার্সরেরা প্রসূতির ফুল বের করার জন্য জরায়ু কেটে ক্ষত বিক্ষত করে এসময় রোগীর জরায়ুপথে প্রচুর রক্তপাত ঘটলে রোগীর স্বজনরা রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে কর্তব্যরত রার্সরা রোগীর লোকজনদের কথা না বলে মুখে টেপ দিয়ে বসে থাকতে বলে।

শেষ পর্যন্ত কর্তব্যরত চিকিৎসক-নার্সদের অবহেলার কারনে শনিবার দুপুরে চিকিৎসাধীনাবস্থায় নাসরিন আক্তারের মৃত্যু হয়।

রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা ওয়ার্ডে গেলে দায়িত্বে থাকা ইনচার্জ ডা: নাহিদুজ্জামান মৃত্যু প্রসূতির ব্যাপারে তথ্য দিবেনা বলে জানন স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তার নির্দেশ ছাড়া এ ব্যাপারে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে স্বজনদের সাথে কথা হলে তারা জানান,আমাদের রোগিকে তাদের অবহেলার জন্য মৃত্যু হয়।আমরা রোগির আত্মচিৎকার শুনে নার্সদের বলি আমাদের রোগিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ছাড় দেন কিন্ত টাকার লোভে তারা তাদের চেষ্টা অব্যহত রাখে এবং আমাদের মুখে টেপ মেরে রাখার কথা বলে।

পরে স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স কর্মকর্তা ডা: ইফতেখার আলম খান এর সাথে কথা হলে কর্মকর্তা জানান, নাছরিন নামের প্রসূতির অবস্থার অবনতি হলে শনিবার সকাল ১০টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ট করা হয়।

প্রসূতি স্থানন্তর গাফিলতির কারনে বেলা ১২.৪০ মিনিটে প্রসূতি উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স মারা যায়। টাকার বিনিময়ে ইঞ্জেকশনের বিষয়ে দায়িত্বে থাকা ডাক্তার-নার্সদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি সাংবাদিকদের জানান।