মাভাবিপ্রবি ছাত্রলীগের ২১ আগস্টের বিক্ষোভ মিছিল

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৪:৩২ পিএম, সোমবার, ২১ আগস্ট ২০১৭ | ৪৯৫

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের পর বাংলাদেশের ইতিহাসের আরেকটি কলঙ্কজনক ও রক্তাক্ত দিন এটি। ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয় এবং ৩০ বছর পর সেই আগস্ট মাসেই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা করা হয়। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালে ২১ শে আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে নারকীয় এই গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে বোমা-গ্রেনেড হামলা ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ এক সমাবেশের আয়োজন করে। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ট্রাকের ওপর স্থাপিত মঞ্চে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা তার বক্তব্য শেষ করার পর পরই বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে অতর্কিতে চারিদিক থেকে গ্রেনেড এসে পড়তে থাকে।

ওই সময় মঞ্চে উপবিষ্ট দলের জাতীয় নেতারা পরিস্থিতি বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে মানববর্ম রচনা করে সভাপতি শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেন।

এই বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় ৪শ’ জন আহত হন। আহতদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। তাদের কেউ কেউ আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি।

এই বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় নিহতরা হলেন- সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল­ুর রহমান এর সহধর্মিনী আইভি রহমান, তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, রেজিনা বেগম, নাসির উদ্দিন সরদার, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারি, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, রতন শিকদার, লিটন মুনশী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা). মোশতাক আহমেদ সেন্টু, মোহাম্মদ হানিফ, আবুল কাশেম, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, এম শামসুদ্দিন এবং ইসহাক মিয়া।

মারাত্মক আহত হয়েছিলেন সেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা, আমির হোসেন আমু, আব্দুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, এডভোকেট সাহারা খাতুন, মোহাম্মদ হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, নজরুল ইসলাম বাবু, আওলাদ হোসেন, সাঈদ খোকন, মাহবুবা আখতার, এডভোকেট উম্মে রাজিয়া কাজল, নাসিমা ফেরদৌস, শাহিদা তারেক দীপ্তি, রাশেদা আখতার রুমা, হামিদা খানম মনি, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম, রুমা ইসলাম, কাজী মোয়াজ্জেম হোসেইন ও মামুন।

আহত আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী-সমর্থকদের অনেকে এখনো স্প্লিন্টারের আঘাত নিয়ে ধুকে ধুকে জীবন কাটাচ্ছেন। সেদিন যারা আহত হয়েছিলেন তাদের অনেককেই সারা জীবন গ্রেনেডের স্প্লিন্টার বহন করে চলতে হবে । কেউ কেউ সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ব নিয়েই বেঁচে আছেন।

পরবর্তী সময়ে ঢাকার সাবেক মেয়র হানিফ ভাই শরীরে অসংখ্য গ্রেনেড এর স্প্লিন্টার নিয়ে জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এই নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে আজকে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়।

মিছিলটি দুপুর ১২.৩০ মিনিটে ক্যাফেটেরিয়ার সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান রাস্তা প্রদক্ষিন করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এসে শেষ হয়।

এ সময় মিছিলে উপস্থিত ছিলেন ফুড টেকনোলজি এন্ড নিউট্রিশনাল সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা সজীব তালুকদার, মো. ইমরান মিয়া, নিবিড় পাল, মোঃ খুরশেদ আলম, সিরাজুল ইসলাম, ইরফান আহমেদ, তাছীকুল আলম তুষার । গণিত বিভাগের রাজিকুর রহমান, আইসিটি বিভাগের ইয়াছিন আরাফাত, বিবিএ বিভাগের রাজিব হোসাইন রাজ, অর্থনীতি বিভাগের কাজী মোঃ রফিক, জুলফিকার, ইমদাদুল হক মির্জা ।

সিপিএস বিভাগের সাইদুর রহমান, খোরশেদ জয় সহ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রায় ১৫০-২০০ জন নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।