টাঙ্গাইলে সবজি চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা

ধনবাড়ী (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১২:০৩ পিএম, সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৩ | ৩০০

কৃষিতে বর্তমানে অন্য ফসলের চাষ কমিয়ে দিনদিন সবজি চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। ধান চাষের চেয়ে সবজি চাষ লাভজনক। টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার কৃষকরা মৌসুমভিত্তিক নানা রকমের সবজি চাষ করছেন। ফলে কৃষকদের ঘটছে ভাগ্যের পরিবর্তন। সাবলম্বী হয়েও উঠেছেন তাঁরা। বর্তমান বাজারে সবজির ভালো দাম থাকায় তাঁরা বেজায় খুশি। 

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র মতে, অনুকূল পরিবেশ থাকায় এই অঞ্চলের বড়, ক্ষুদ্র, প্রান্তিক ও বরগা চাষিরা। খরিপ-১, খরিপ-২ এবং রবি মৌসুমে শাক-সবজির আবাদ করেছে প্রায় ৫’শত ৫০ হেক্টর জমিতে। সবজির উন্নত জাত, সুষম সার ব্যবহার এবং সময়মতো রোগবালাই দমন করার কারণে সবজি চাষে সাফল্য এসেছে। 

সরেজমিনে সোমবার উপজেলার মুশুদ্দি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শতশত বিঘা জুড়ে শীতের হরেক রকম সবজি চাষ করছে স্থানীয় কৃষকরা। এর মধ্যে মুলা, বেগুন, করলা, ঢেঁড়স, পটল, শিম, মিষ্টি-কুমড়া, চাল-কমড়া, বাঁধাকপি, ফুলকপি, লাউ, গাঁজর, লাল শাক, পুই শাক, পালং শাকসহ শীতের বেশ রকমের শাক-সবজি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার সবজির দাম বেশি। ভালো দাম পাওয়ায় শীতকালীন সবজি চাষে কৃষকের আগ্রহ বেশি। প্রকল্পভিত্তিকও চাষ হচ্ছে এই সব সবজি। 

আরও দেখা গেছে, সবজি খেতেগুলোতে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে পরিবেশবান্ধব ভার্মি কম্পোস্ট। ক্ষতিকর পোকা-মাকড় দমনের জন্য রাসায়নিক-কীটনাশকের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে সেক্স ফেরোমোন ফাঁদ, হলুদ আঠালো ফাঁদ, নেট হাউস ও জৈব বালাইনাশক।

মুশুদ্দি এলাকার কৃষক মো. আল-আমিন, মো. রফিকুল ইসলাম ও শামছুল হকের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানান, সবজি চাষের ফলে তাদের সংসারে সচ্ছলতা এসেছে। তাঁরা এখন স্বাবলম্বী। এখন তাদের শাক-সবজি বিক্রির জন্য হাটবাজারে যেতে হয় না। সবজি খেত থেকেই পাইকাররা ন্যায্য দামে কিনে নিয়ে যায় এবং দামও ভালো পাওয়া যায়। এ ইউনিয়নের প্রায় সব ধরনের শাক-সবজি চাষ হয়। এখানকার শাক-সবজি। এ গ্রামকে ‘বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি’ এর গ্রাম বলা হয়। এ শাক-সবজিগুলো ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করেন পাইকারা।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন এক ইঞ্চি জমিও পতিত রাখা যাবে না। তাই জমি পতিত না রেখে কৃষকরা অতিরিক্ত ফসল হিসাবে শাক-সবজি চাষ করছেন। কৃষকরা এবার ভালো দাম পাওয়ায় তাদের আগ্রহ আরও বেড়েছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘এ অঞ্চলে সবজি চাষের জন্য মাটি খুবই উর্বর। সবজি চাষে কৃষকদের আগ্রহও বেশি। সবজি চাষ করে তাঁরা বেশি লাভবান হচ্ছে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। সরকার সবজি চাষিদের প্রণোদনাও দিচ্ছেন।’