টাঙ্গাইলে কলেজ শিক্ষক আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে শারিরীক হেনস্থার অভিযোগ

স্টার্ফ রিপোটার
প্রকাশিত: ১১:৩৪ এএম, মঙ্গলবার, ৫ অক্টোবর ২০২১ | ৫৬৬৪

টাঙ্গাইল টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক এ কে এম আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবককে ডেকে নিয়ে শারিরীকভাবে হেনস্থা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা যায়, গত ২ অক্টোবর দুপুরে ওই অভিভাবক তার ছোট ভাইকে নিয়ে টাঙ্গাইল টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে যায়। এসময় কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক এ কে এম আনিসুর রহমান ওই অভিভাবক কে ডেকে নিয়ে তার গুনগান করতে থাকেন। পরে তাকে কলেজের ভিতরে থাকা ৪র্থ তলা ভবনে নিয়ে যায়। ওই অভিভাবক যেতে অস্বীকার করলে তাকে কলেজের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ দেখানোর কথা বলে জোর করে নিয়ে যায়। সে সময় ৪র্থ তলায় কোন শিক্ষার্থী না থাকায় ওই অভিভাবকের শরীরে হাত দেয় এবং খারাপ ইশারা করতে থাকে। এক পর্যায়ে ওই অভিভাবক তার কাছ থেকে সরে দাড়াঁলে তিনি তার হাত ধরে রাখেন। 

পরে ওই অভিভাবক তার কাছ থেকে নিজেকে বাঁচাতে সেখান থেকে দৌড়ে নিচে নেমে আসে এবং কলেজ অধ্যক্ষের রুমে যায়। সেখানে থাকা ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক সন্তোষ চন্দ্র দাসকে বিষয়টি জানায়। পরে সে কলেজ প্রাঙ্গন থেকে চলে আসে।

কলেজের কয়েকজন শিক্ষক জানায়, বাংলা বিভাগের শিক্ষক এ কে এম আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে হেনস্থার একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বলে শুনেছি। তবে তিনি যদি এমন কোন কাজ করে থাকেন তাহলে তা ঠিক হয়নি। এটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে যদি এমন ঘটনা হয় তাহলে শিক্ষকদের সম্মান কোথায় যাবে। যদি তিনি এ ধরনের কাজ করে থাকেন তবে অবশ্যই তার শাস্তি হওয়া উচিত।

অভিযোগকারী ওই অভিভাবক বলেন, আমার ছোট ভাইকে কলেজে নিয়ে যাওয়ার পর ওই শিক্ষক আমাকে ডেকে নিয়ে যায় কথা বলার জন্য। এরপর তিনি খারাপ উদ্দেশ্যে আমার শরীরে হাত দেয়। আমি এ বিষয়ে কলেজের এক শিক্ষককে জানালেও তিনি কোন গুরুত্ব দেয়নি। পরে বাধ্য হয়ে আমি লিখিত অভিযোগ করেছি। আমি ওই শিক্ষকের কাছ থেকে এমন আচরণ আশা করিনি। আমি এর সঠিক বিচার চাই। আজ আমার সাথে এমন করার চেষ্ঠা করেছে। কাল অন্য অভিভাবকদের সাথেও তো এর চেয়ে বেশি কিছু ঘটতে পারে। আমি এর বিচার চাই।

এ বিষয়ে ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক সন্তোষ চন্দ্র দাস বলেন, আমিসহ আরেকজন স্যার আমরা অফিস রুমে বসে ছিলাম। এসময় ওই অভিভাবক আমার কাছে আসে এবং বলে আপনাদের শিক্ষকদের সংশোধন কইরেন। খারাপ স্পর্শ এবং ভালো র্স্পশ কোনটা সেটা বুঝার ক্ষমতা আমার আছে। এই বলে তিনি চলে যায়। কিন্তু কি কারনে এই কথা বললো তা বুঝতে পারিনি। এজন্য তেমন একটা গুরুত্ব দেয়নি।

অভিযোগকারীর স্বামী রিফাত আরিফুল বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অনেক সম্মানি মানুষ। কিন্তু শিক্ষকরা যদি এমন খারাপ চরিত্রের মানুষ হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা কি শিখবে তাদের কাছ থেকে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমি চাই এমন শিক্ষকের সর্ব্বোচ শাস্তি হোক।

এ বিষয়ে কলেজের শিক্ষক এ কে এম আনিসুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

টাঙ্গাইল টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো: মনিরুজ্জামন বলেন, এ ঘটনায় ওই অভিভাবক একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এ বিষয়ে আমরা একটি তদন্ত কমিটি করেছি। তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হবে। এ বিষয়ে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি।